আতঙ্কিত না হলে দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না : খাদ্যমন্ত্রী
 প্রকাশিত: 
 ১৩ নভেম্বর ২০২২ ২১:৩৪
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:০৭
 
                                খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দেশে যে পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে ও মজুদ রয়েছে, জনগণ যদি হতাশাগ্রস্ত ও আতঙ্ক না হয় তাহলে দেশে কোনো দুর্ভিক্ষ হবে না।
আজ রোববার কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানির জন্য ‘হেলথ সার্টিফিকেট’ প্রদান অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) পণ্যের এ স্বাস্থ্য সনদ প্রদান করে। প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি প্রতিষ্ঠানকে পণ্যের স্বাস্থ্য সনদ প্রদান করা হয়। এগুলো হলো—ইএসএল বাংলাদেশ লি. ও ট্রাস্ট অ্যান্ড ট্রেড এম ইমপেক্স।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনের নানাবিধ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সামনে ইরি ও বোরো মৌসুমে পর্যাপ্ত পরিমাণে সার মজুর ও সেচের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশে খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে, এছাড়া পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে। আবার বেসরকারিভাবেও খাদ্যদ্রব্য আমদানি করা হচ্ছে। আমরা যদি হতাশা আর আতঙ্কিত হয়ে তিন থেকে চার গুণ বেশি পণ্য কিনে মজুদ না করি তাহলে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হবে না।
উদাহরণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন, গত সপ্তাহে ডাক্তারের চেম্বারে এক লোক চালসহ খাদ্যদ্রব্য মজুদ করে রাখতে সবাইকে পরামর্শ দিচ্ছেন। ওই লোক জানান তিনি দেড় বছরের জন্য চাল-ডালসহ নিত্যপণ্য মজুদ করে রেখেছেন। তার মতো আতঙ্কিত না হয়ে সবাই খাদ্যদ্রব্য মজুদ না করে তাহলে দেশে খাদ্য সংকট হবে না। এছাড়া দেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই।
পণ্যের স্বাস্থ্য সনদ প্রসঙ্গে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমাদেরকে সার্টিফিকেট দিয়ে প্রমাণ করতে হচ্ছে রপ্তানির জন্য নিরাপদ খাদ্য দরকার। এখন আমাদের সবার উচিত সচেতন হওয়া। আমরা যদি সব খাদ্য নিরাপদ করতে পারি তাহলে এত সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হবে না। নিজেদের সু-স্বাস্থ্য ও খাদ্যদ্রব্য রপ্তানির জন্য নিরাপদ খাদ্যের একটা অবস্থা তৈরি করতে হবে। যাতে করে সার্টিফিকেট নয়, আমাদের নাম শুনলেই বিদেশিরা যেন খাদ্যদ্রব্য আমদানিতে আগ্রহ হন।
তিনি বলেন, আমাদের উচিত যখন একটা শিশু জন্ম হয় তখনই নামীদামী ব্রান্ডের গুঁড়া দুধ না খাইয়ে অন্তত প্রথম ছয় মাস শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো। বিপরীতে বাজারের গুঁড়া দুধ খাওয়ালে ৪-৫ বছর বয়সেই শিশু নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এভাবে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই আমাদের নিজেদেরকে আগে সচেতন হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এতদিন খাদ্যদ্রব্য রপ্তানির জন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান দেশ-বিদেশের ল্যাব থেকে পণ্যের মান পরীক্ষা করে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) কাছে দিতো। ওইসব পরীক্ষা নিরীক্ষার সব কাজ এখন থেকে বিএফএসএ নিজেই করবে। এতে করে একদিকে রপ্তানিকারকদের ভোগান্তি কমবে, অন্যদিকে পণ্যের মানের বিষয়েও কম্পোমাইজ করার সুযোগ থাকবে না।
জানা যায়, আমদানিকারক দেশের চাহিদা অনুযায়ী রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান পণ্যের ল্যাব টেস্ট রিপোর্ট আনলে ইপিবি তা দেখে সার্টিফিকেট ইস্যু করতো। যেসব রপ্তানিকারকের সার্টিফিকেট দরকার, বন্দর থেকে তাদের পণ্যের নমুনা এনে পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট প্রদানের সবগুলো কাজই করবে বিএফএসএ। তবে ল্যাব টেস্টে কোনো পণ্যে হেলথ হ্যাজার্ড পাওয়া গেলে তা আর রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে না।
খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএফএসএর চেয়ারম্যান মো. আবদুল কাইউম সরকার ও সদস্য আব্দুল আলীমসহ আরও অনেকে।

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: