বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৪ই চৈত্র ১৪৩০


দাবদাহে যখন অতিষ্ঠ জীবন


প্রকাশিত:
১৫ এপ্রিল ২০২৩ ২২:৫১

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ১৮:৪৩

ছবি সংগৃহিত

মাত্র ক’দিন আগেই শৈত্যপ্রবাহে জর্জরিত ছিল জনজীবন। হাতের পাঁচ আঙুলে মাস গুনে শেষ না করতেই এখন প্রকৃতির বৈরী আবহাওয়ার মুখোমুখি বাংলাদেশ।

দেশজুড়ে চলছে দাবদাহ। চলমান তাপপ্রবাহে দেশের তাপমাত্রা চল্লিশ ছাড়িয়ে যাওয়ার শঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। অবশ্য এর মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গার জনজীবন। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটি চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

তাছাড়া রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে (ঢাকা পোস্ট, ১৩ এপ্রিল ২০২৩)।

সঙ্গত কারণেই দাবদাহে জর্জরিত মানুষ জানতে চায় সতর্কতার জায়গাগুলো সম্বন্ধে। ডিহাইড্রেশন আর হিটস্ট্রোক যে এই সময়ের সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি তা কে না জানে। তারপরও সেই জানা কথাগুলোই আরেকটু বিস্তারিতভাবে জানা নিশ্চয়ই প্রয়োজন।

হিটস্ট্রোক একটি প্রাণঘাতী স্বাস্থ্য সমস্যা যেখানে রোগীর দেহের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যেতে পারে। সাধারণত ভ্যাপসা গরমে দীর্ঘ সময় থাকলে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি দেখা দেয়।

তাছাড়া অত্যধিক কায়িক পরিশ্রম আর ডিহাইড্রেশনের কারণেও হিটস্ট্রোক হতে পারে। হিটস্ট্রোকের লক্ষণগুলোর মধ্যে শরীরের অত্যধিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ছাড়াও রয়েছে কনফিউশন, কথা জড়িয়ে আসা, বমি বা বমি ভাব, হার্ট রেট আর শ্বাস-প্রশ্বাস বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি।

বাড়াবাড়ি রকমের হিটস্ট্রোকে খিঁচুনি হতে পারে, আক্রান্ত ব্যক্তি অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন। খুব দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে হিটস্ট্রোক রোগীর মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

হিটস্ট্রোকের চিকিৎসায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমিয়ে আনা। এর জন্য শরীরে প্রচুর ঠান্ডা পানি ঢালতে হবে।

কখনো কখনো শিরায় স্যালাইন দেওয়ারও প্রয়োজন হতে পারে। তবে কথায় যেমন আছে, ‘চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম’, হিটস্ট্রোক রোগের ক্ষেত্রেও বিষয়টা তাই।

হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে হলে দীর্ঘ সময় গরমে থাকা এড়িয়ে চলতে হবে। উচিত হবে প্রচুর পানি আর পানীয় গ্রহণ করা।

ঢিলে ঢালা, হালকা রঙের পোশাক পরা আর সম্ভব হলে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচার জন্য কার্যকর। তাছাড়া বাইরে বের হলে সাথে ছাতা রাখাটা একটা ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে।

হিটস্ট্রোক ছাড়াও এই গরমে অতিরিক্ত ঘাম থেকে ডিহাইড্রেশন দেখা দিতে পারে। তাই রোদ এড়িয়ে চলতে হবে। তাছাড়া শরীরে যদি বেশি ঘাম ঝরে, তাহলে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার স্যালাইন গ্রহণ করা প্রয়োজন।

তবে পানি আর পানীয়র ব্যাপারে সাবধান। বেশি পানি আর পানীয় খেতে গিয়ে আবার না হেপাটাইটিস এ (Hepatitis A) আর হেপাটাইটিস ই (Hepatitis E) ভাইরাস সংক্রমণ থেকে জন্ডিস কিংবা ডাইরিয়া-কলেরা দেখা দেয়। কারণ এই রোগগুলোর তো ছড়ানোর রাস্তা একটাই আর তা হলো দূষিত পানি আর দূষিত খাবার।

পানি আর পানীয়র উৎসটা যেন ফোটানো, মিনারেল বা টিউবওয়েল হয় সেটা মাথায় রাখা জরুরি। ডাবের পানি খাওয়াটা নিরাপদ।

অন্য ফলের রসেও সমস্যা নেই যদি সেই রসে মেশানো পানিটা হয় নিরাপদ। মনে রাখতে হবে সামান্য কিছু সচেতনতাই রক্ষা করতে পারে বড় ধরনের বিপদ থেকে।

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) ।। ডিভিশন প্রধান, ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সদস্য সচিব, সম্প্রীতি বাংলাদেশ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top