নামাজ না পড়লে কোরবানি হবে?
প্রকাশিত:
৭ মে ২০২৫ ১৭:০৯
আপডেট:
৮ মে ২০২৫ ০৮:১৩

নামাজ ও কোরবানি দুটি আলাদা ইবাদত। নামাজ প্রত্যেক সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের ওপর ফরজ হলেও সবার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয় না, বরং শরয়ি দৃষ্টিকোণ থেকে সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়।
সুতরাং দুটি আলাদা বিধান। তাই নামাজ না পড়লে কোরবানি হবে না—এমন কথা বলা উচিত নয়। তবে, যাদের মধ্যে ফরজ বিধান নামাজের ব্যাপারে অবহেলা রয়েছে, তারা আদৌ আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়তে কোরবানি করছে কি না সেটি সন্দেহযুক্ত। কারণ, নামাজ এমন ইবাদত যা বান্দা ও কুফরের মধ্যে পার্থক্যকারী। হাদিসের ভাষায়, ‘কোনো ব্যক্তি এবং কুফর ও শিরকের মধ্যে ব্যবধান শুধু নামাজ না পড়া।’ আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘যার ভেতর নামাজ নেই, তার ভেতর দ্বীনের কোনো হিস্যা নেই। (মুসনাদে বাজ্জার: ৮৫৩৯)
কোরবানির পশুতে নামাজ না পড়া কাউকে শরিক বানাতেও নিরুৎসাহিত করেন আলেমরা। কারণ, আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা এবং আল্লাহকে ভয় করা ব্যক্তি কখনও নামাজে ছেড়ে দিতে পারে না।
আর আল্লাহর সন্তুষ্টি বাদ দিয়ে শুধুমাত্র গোশত খাওয়ার উদ্দেশ্যে কেউ কোরবানি করলে বাকি শরিকদের কোরবানিও সহিহ হবে না। এ বিষয়ে বিখ্যাত ফতোয়ার কিতাবগুলোতে বলা হয়েছে- যদি কেউ আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কোরবানি না করে শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কোরবানি করে তাহলে তার কোরবানি সহিহ হবে না। তাকে অংশীদার বানালে শরিকদের কারো কোরবানি হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরিক নির্বাচন করতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৮, কাজিখান: ৩/৩৪৯)
তাই আলেমদের পরামর্শ হচ্ছে-নামাজের ব্যাপারে অবহেলা করে এমন ব্যক্তিকে শরিক করা নিজের কোরবানির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তবে যদি এমন হয় যে, সে নামাজের গুরুত্ব উপলব্ধি করে, কিন্তু অলসতার কারণে কখনো কখনো ছুটে যায়—এমন ব্যক্তির সাথে কোরবানি দেওয়া যাবে। তারপরও সর্বাবস্থায় উত্তম হলো— এমন শরিক খুঁজে বের করা যারা শরিয়তের যাবতীয় বিধি-বিধান যথাযথ মেনে চলে। (সহিহ মুসলিম: ১৩১৮; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৮)
উল্লেখ্য, যারা নামাজের গুরুত্ব বোঝে না, তাদেরকে নামাজে উৎসাহিত করা এবং নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরা অন্যদের কর্তব্য। তাকে বোঝাতে হবে যে, কোরবানি ওয়াজিব, কিন্তু নামাজ ফরজ; যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি করতে পারে, তাকে অবশ্যই নামাজের ব্যাপারে আরও বেশি সচেতন হওয়া জরুরি। কারণ, মহান আল্লাহর কাছে নামাজ এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, বান্দার কাছ থেকে সর্বপ্রথম তিনি নামাজের হিসাব নেবেন।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দ্বীনের সকল বিধান মেনে চলার তাওফিক দান করুন। দ্বীনদার মুসলমানদের সাথে কোরবানি দেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমাদের সবার কোরবানি কবুল করুন। আমিন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: