বুধবার, ৯ই জুলাই ২০২৫, ২৫শে আষাঢ় ১৪৩২


কোরআনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার ৫ উপায়


প্রকাশিত:
৯ জুলাই ২০২৫ ১৫:৫৮

আপডেট:
৯ জুলাই ২০২৫ ২২:০৮

ছবি সংগৃহীত

বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু উমামা বাহিলি (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তোমরা কোরআন তিলাওয়াত করবে। কেননা কিয়ামতের দিন তা তিলাওয়াতকারীদের জন্য সুপারিশকারী হিসেবে উপস্থিত হবে...। (মুসলিম, হাদিস : ১৭৪৭)

কোরআনের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরির পাঁচটি গোপন রহস্যের কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম আবু হামিদ আল-গাজালি (রহ.)।

তিনি বলেছেন, কোরআন পাঠের বাহ্যিক কিছু শিষ্টাচার আছে, তবে এর অভ্যন্তরে লুকিয়ে আছে কিছু ‘রুহানিয়াত গোপন রহস্য’, যেগুলো পাঠকের জীবন বদলে দিতে পারে।

আলোচিত সেই পাঁচ গোপন রহস্য নিচে তুলে ধরা হলো—

১. আল্লাহর বাণীর মহত্ত্ব অনুভব করা

কোরআন তিলাওয়াত শুরুর আগে পাঠক যেন হৃদয়ে অনুভব করেন, তিনি কোনো সাধারণ বই নয়—সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর বাণী পাঠ করছেন। আরশ, আসমান-জমিন ও সৃষ্টিজগতের দৃশ্য যেন চোখে ভেসে ওঠে এবং তিলাওয়াকতারী যেন কোরআনের মাধ্যমে আল্লাহর গুণাবলি, জ্ঞান ও হিকমতের পরিচয় লাভ করেন।

২. অর্থ নিয়ে গভীর চিন্তা ও অনুধাবন করা

ইমাম গাজালি বলেন, যারা সত্যিই কোরআনকে ভালোবাসেন, তারা শুধু পড়েই থেমে থাকেন না; বরং প্রতিটি আয়াতের অর্থ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেন।

তিনি হজরত আলী (রা.)-এর বাণী উল্লেখ করে বলেন : ‘যে ইবাদতে অনুধাবন নেই, সে ইবাদতে কোনো কল্যাণ নেই; যে তিলাওয়াতে চিন্তা নেই, তাও অর্থহীন’।

৩. প্রাসঙ্গিক জ্ঞান আহরণ করা

তিলাওয়াতের সময় কোরআনের প্রতিটি অংশ থেকে প্রাসঙ্গিক জ্ঞান আহরণ করতে হবে। যেমন—

আল্লাহর গুণাবলীর আয়াত থেকে মহত্ত্বের জ্ঞান আহরণ।
সিরাতে মুস্তাকিমের নির্দেশনায় রহমত ও হিকমতের জ্ঞান আহরণ।
শত্রুদের ধ্বংসের কাহিনিতে পরাক্রম ও বিজয়ের শিক্ষা গ্রহণ।
নবীদের জীবনের বর্ণনায় দয়া ও করুণার উপলব্ধি।
৪. কোরআন বোঝার প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে চলা

আল্লাহ বলেন : …নিশ্চয়ই আমি তাদের হৃদয়ে পর্দা দিয়ে দিয়েছি, যাতে তারা কোরআন না বুঝতে পারে…(সূরা কাহফ আয়াত : ৫৪)

ইমাম গাজালি ব্যাখ্যা করেছেন, কোরআন বোঝার পথে প্রধান দুটি বাধা হলো—

১. সন্দেহ ও অবিশ্বাস।
২. দুনিয়ার প্রতি গভীর আসক্তি।

এছাড়া ইবাদতকারীরা কোরআন বোঝার ক্ষেত্রে যে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হন, তাহলো—

ওয়াসওয়াসা বা অপ্রাসঙ্গিক চিন্তায় মনোযোগ হারানো।
শুধু বাহ্যিক অর্থে সীমাবদ্ধ থাকা, ফলে আয়াতের গভীরতা অধরা রয়ে যায়।
৫. আয়াতের প্রভাব নিজের আচরণে প্রকাশ করা

ইমাম গাজালি রহ. বলেন, তিলাওয়াতকৃত আয়াত যেন মানুষের আচরণ, অনুভূতি ও শরীরে দৃশ্যমান হয়। যেমন—

রহমতের আয়াতে আনন্দের অনুভূতি প্রকাশ।
শাস্তির আয়াতে ভয়ের অনুভূতি প্রকাশ।
আল্লাহর গুণাবলির আয়াতে বিনয়ের অনুভূতি প্রকাশ।
শিরকের আয়াতে লজ্জার অনুভূতি প্রকাশ।
এমন অনুভব ও প্রতিক্রিয়া কোরআন তিলাওয়াতকে জীবন্ত করে তোলে।

ইমাম গাজালী (রহ.) বলেন, এভাবেই একজন মুসলিমের হৃদয় কোরআনের বরকত ও আলোয় আলোকিত হতে পারে।

সূত্র : অ্যাবাউট ইসলাম

ডিএম /সীমা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top