চ্যাটজিপিটিতে ১৫ কমান্ডে কতটুকু পানি খরচ হয়?
 প্রকাশিত: 
 ১৪ জুন ২০২৫ ০৭:৪০
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:১৫
                                বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি যেমন মানুষের দৈনন্দিন কাজকে সহজ করছে, তেমনি এর পরিবেশগত প্রভাব নিয়েও বাড়ছে আলোচনা। বিশেষ করে এআই চ্যাটবটগুলোর কার্যকারিতার পেছনে যে পরিমাণ শক্তি ও পানি খরচ হয়, তা নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এবার সেই আলোচনায় যুক্ত হলেন ওপেনএআইয়ের সিইও স্যাম অল্টম্যান।
একটি ব্লগ পোস্টে স্যাম অল্টম্যান জানিয়েছেন, চ্যাটজিপিটিকে করা প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরে প্রায় ০.০০০০৮৫ গ্যালন পানি ব্যবহার হয়। এই পরিমাণ পানি এক চা চামচের প্রায় ১৫ ভাগের এক ভাগের সমান। অর্থাৎ, আপনি যদি চ্যাটজিপিটিতে ১৫টি প্রশ্ন করেন তবে এর উত্তরের জন্যই ব্যবহার হবে একটি চা চামচ পরিমাণ পানি।
এই হিসাব শুনতে অল্প মনে হলেও বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ব্যবহারকারীর প্রতিদিনের ব্যবহার বিবেচনায় এটি এক বিশাল পরিমাণ পানিতে রূপ নেয়।
শুধু পানি নয়, প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরে ০.৩৪ ওয়াট-আওয়ার বিদ্যুৎ খরচ হয়। তুলনা হিসেবে বলা যায়, একটি সাধারণ ওভেন এক সেকেন্ডে অথবা একটি এনার্জি সেভিং বাল্ব ২ মিনিটে যত বিদ্যুৎ খরচ করে, চ্যাটজিপিটির একটি উত্তরের পেছনে ঠিক তত বিদ্যুৎ ব্যয় হয়।
স্যাম অল্টম্যান আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কার্যকলাপে বিদ্যুৎ খরচ এতটাই বেড়ে যেতে পারে যে তা সাধারণ ব্যবহারকারীর ঘরের মাসিক বিদ্যুৎ বিলের সমান হয়ে যেতে পারে।
চ্যাটজিপিটির মতো চ্যাটবটগুলোর পেছনে কাজ করে বড় মাপের ডেটা সেন্টার এবং সার্ভার ফার্ম। এই সার্ভারগুলোকে চালু রাখতে ও ঠাণ্ডা রাখতে প্রতিনিয়ত প্রয়োজন হয় প্রচুর বিদ্যুৎ এবং পানি। পানি মূলত ব্যবহার হয় কুলিং সিস্টেমে, যাতে সার্ভারের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সার্ভার যত শক্তিশালী হয়, তত বেশি তাপ উৎপন্ন করে। আর সেই তাপ কমাতে আরও বেশি পানি ব্যবহার করা লাগে। তাই, চ্যাটজিপিটির মতো উন্নত এআই প্রযুক্তি যত বেশি ব্যবহৃত হবে, ততই জল ও বিদ্যুৎ চাহিদা বাড়বে।
গবেষকদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এআই প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা চলতে থাকলে, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ এটি বিটকয়েন মাইনিংয়ের চেয়েও বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারে। উল্লেখ্য, বিটকয়েন মাইনিং ইতোমধ্যেই বৈশ্বিক বিদ্যুৎ খরচের একটি বিশাল অংশ দখল করে আছে।
স্যাম অল্টম্যান যদিও পানি ও বিদ্যুৎ খরচের বিষয়ে নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান দিয়েছেন, তবে এই হিসাবের সূত্র বা গাণিতিক বিশ্লেষণ এখনো ওপেনএআই প্রকাশ করেনি। অনেকে মনে করছেন, এই তথ্য প্রকাশের উদ্দেশ্য হলো এআই প্রযুক্তিকে ঘিরে উঠা পরিবেশগত সমালোচনার জবাব দেয়া এবং তাদের প্রযুক্তির দক্ষতা ও জবাবদিহিতা তুলে ধরা।

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: