নতুন টেলিকম আইন কার্যকর ৩ ধাপে, ২০২৭ সালে অবসান হবে পুরোনো লাইসেন্স
 প্রকাশিত: 
 ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:২৮
 আপডেট:
 ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:১৪
                                টেলিযোগাযোগ খাতের সংস্কারে ‘টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং নীতি ২০২৫’ কার্যকর হচ্ছে। এই নীতির আওতায় তিন ধাপে পুরোনো লাইসেন্স কাঠামো থেকে নতুন লাইসেন্স ব্যবস্থায় রূপান্তর সম্পন্ন হবে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত নীতিমালায় এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, প্রথম ধাপে সরকার নীতির অনুমোদন দিলেই তা কার্যকর হবে। এ সময় শিল্পে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে নীতি ও বিধিবিধানে পরিবর্তন আনা হবে। পাশাপাশি নতুন লাইসেন্স ক্যাটাগরির জন্য নির্দেশিকা প্রস্তুত করা হবে এবং পুরোনো নির্দেশিকা ও শর্তাবলি হালনাগাদ করা হবে।
দ্বিতীয় ধাপে অনুমোদনের পরপরই নতুন লাইসেন্স ক্যাটাগরি চালু হবে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এ সময় নতুন লাইসেন্স ইস্যুর নির্দেশিকা দেবে। বিদ্যমান লাইসেন্সধারীরা চাইলে নতুন কাঠামোয় স্থানান্তর হতে পারবেন। ভবিষ্যতে সব নতুন লাইসেন্স শুধু নতুন ক্যাটাগরির আওতাতেই দেওয়া হবে। প্রয়োজনে একীভূত বা অধিগ্রহণের নীতিমালাও জারি করতে পারবে বিটিআরসি।
তৃতীয় ধাপ শুরু হবে সর্বোচ্চ ৩০ জুন ২০২৭ সালের মধ্যে। তখন থেকে পুরোনো লাইসেন্স ব্যবস্থার ধীরে ধীরে অবসান ঘটবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব ক্যাটাগরিই নতুন কাঠামোয় চলে আসবে। তবে যেসব প্রতিষ্ঠান আগে নতুন লাইসেন্সে রূপান্তর হবে, তারা তাদের পুরোনো লাইসেন্সের মেয়াদ যোগ করতে পারবে। সরকার এ রূপান্তরে কোনো ভর্তুকি বা আর্থিক প্রণোদনা দেবে না।
নীতিমালায় আরও স্পষ্ট করা হয়েছে, লাইসেন্সধারীদের অবশ্যই নির্দিষ্ট মান বজায় রাখতে হবে। সারাদেশে সমানভাবে সেবা দিতে হবে, বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকা, দুর্গম পার্বত্য অঞ্চল ও গ্রামীণ অঞ্চলে। এজন্য বিটিআরসি কর্মক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে প্রণোদনা দিতে পারবে– যেমন স্পেকট্রাম ফিতে ছাড়, সোশ্যাল অবলিগেশন ফান্ড থেকে অর্থায়ন, কিংবা গবেষণা ও উদ্ভাবনী সহায়তা।
এছাড়া, সেবাদাতাদের ফাইবার নেটওয়ার্ক ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে, ৮০ শতাংশ টাওয়ারকে তিন বছরের মধ্যে ফাইবারাইজ করতে হবে, এবং দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় ২৫ শতাংশ টাওয়ারে ডিজেল জেনারেটর রাখতে হবে। নীতিমালায় আরও রয়েছে, সব অপারেটরকে আইপিভি৬ গ্রহণ করতে হবে, জাতীয় জরুরি সতর্কতা ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে এবং বিটিআরসির কিউওএস ড্যাশবোর্ডে নিয়মিত তথ্য সরবরাহ করতে হবে।
প্রতিযোগিতার ভারসাম্য রক্ষায় সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার (এসএমপি) বা প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানের ওপর বিশেষ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। এর মধ্যে থাকবে ন্যায্য অবকাঠামো ভাগাভাগি, ভাড়ার হার নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ ও বাজারে একচেটিয়া আচরণ প্রতিরোধ।
এ ছাড়া নীতিমালায় ডেটা সুরক্ষা, সাইবার নিরাপত্তা, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার ও ই-ওয়েস্ট ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক সেরা অনুশীলনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে লাইসেন্সধারীদের নিয়মিত নিরাপত্তা অডিট, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে পদক্ষেপ নিতে হবে।
নীতিমালার সবশেষে আরও বলা হয়েছে, আইএলডিটিএস নীতি ২০১০ বাতিল করে এই নতুন নীতিই হবে কার্যকর কাঠামো। তবে বিদ্যমান লাইসেন্স মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: