শনিবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫ই আশ্বিন ১৪৩২

ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ভিসার ফি ১ লাখ ডলার, ক্ষুব্ধ সিলিকন ভ্যালি


প্রকাশিত:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:০৮

আপডেট:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৪৯

ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বড় ধাক্কা দিলেন বিদেশি কর্মীদের জন্য জনপ্রিয় এইচ-১বি ভিসা প্রোগ্রামে। নতুন ঘোষণায় বলা হয়েছে, এখন থেকে এই ভিসার জন্য নিয়োগদাতাদের দিতে হবে ১ লাখ মার্কিন ডলার ফি। আগে যেখানে লটারি নিবন্ধন ফি ছিল মাত্র ২১৫ ডলারঅ সেখানে হঠাৎ এত বিপুল পরিমাণ বাড়ানোয় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

শুক্রবার হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়, নতুন এই প্রোক্লেমেশন বা নির্বাহী আদেশে ভিসা ফি বৃদ্ধির পাশাপাশি আরও কিছু কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। সরকারের দাবি, বহু কোম্পানি এই প্রোগ্রামের অপব্যবহার করছে এবং এর ফলে মার্কিন নাগরিকরা কর্মসংস্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

কোন ভিসা এইচ-১বি?

এইচ-১বি ভিসার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ দিতে পারে। সাধারণত তথ্যপ্রযুক্তি, প্রকৌশল, চিকিৎসা কিংবা গণিতের মতো টেকনিক্যাল ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মীদের জন্যই এই ভিসা ব্যবহার করা হয়। প্রতি বছর সর্বোচ্চ ৬৫ হাজার নতুন ভিসা দেওয়া হয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রিধারী বিদেশিদের জন্য অতিরিক্ত ২০ হাজার কোটা। সাধারণত ভিসার মেয়াদ তিন বছর হলেও এটি নবায়ন বা গ্রিনকার্ডে রূপান্তর করার সুযোগ থাকে।

ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি

হোয়াইট হাউসের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৩ সালে আইটি খাতে কর্মরতদের মধ্যে ৩২ শতাংশ ছিলেন এইচ-১বি ভিসাধারী। বর্তমানে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ শতাংশের বেশি। অন্যদিকে সাম্প্রতিক কম্পিউটার সায়েন্স গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে বেকারত্বের হার পৌঁছেছে ৬.১ শতাংশে। এই পরিস্থিতিকে ‘আমেরিকান কর্মীদের জন্য হুমকি’ হিসেবে বর্ণনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন।

সিলিকন ভ্যালির ক্ষোভ

সিলিকন ভ্যালির অনেক বড় সফলতার পেছনেই রয়েছে এইচ-১বি ভিসা। ইলন মাস্ক নিজেও ছাত্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর প্রথমদিকে এই ভিসার মাধ্যমে কাজ শুরু করেন। গত ডিসেম্বরে মাস্ক নিজের প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ লিখেছিলেন, “আমার মতো স্পেসএক্স ও টেসলা গড়তে যারা যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন, তাদের অনেকেই এইচ-১বি ভিসার কারণে সুযোগ পেয়েছেন। এই প্রোগ্রামই আমেরিকাকে শক্তিশালী করেছে।”

একইভাবে মাইক ক্রিগার, ইনস্টাগ্রামের সহ-প্রতিষ্ঠাতা, প্রথমদিকে এইচ-১বি ভিসার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করেছিলেন।

প্রযুক্তি খাতের সংগঠন ন্যাশনাল ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যাসোসিয়েশন (এনভিসিএ) বলছে, অভিবাসী উদ্যোক্তাদের সফলতার জন্য এইচ-১বি ভিসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও সরাসরি উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে ভিসাটির সীমাবদ্ধতা আছে, তবুও এটি তাদের অভিজ্ঞতা ও নেটওয়ার্ক তৈরির সুযোগ করে দেয়।

আশঙ্কা ও প্রতিক্রিয়া

নতুন সিদ্ধান্তের ফলে দক্ষ জনশক্তি হয়তো যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে কানাডা বা ইউরোপের মতো আরও সহনশীল দেশে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা।

তবে ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, ‘জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার অংশ হিসেবেই’ এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শ্রম মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করতে, যাতে বিদেশি কর্মীরা আমেরিকানদের তুলনায় কম বেতনে কাজ না করেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top