মঙ্গলবার, ২০শে মে ২০২৫, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


ইটভাটার পরিত্যক্ত জমিতে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি


প্রকাশিত:
২০ মে ২০২৫ ১২:৩৭

আপডেট:
২০ মে ২০২৫ ১৭:৪১

ছবি সংগৃহীত

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার একটি ইটভাটার পরিত্যক্ত জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে সফলতা পেয়েছেন একদল কৃষক। অনাবাদি পড়ে থাকা এ জমিতে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন হওয়ায় এখন কৃষকদের মুখে ফুটেছে আনন্দের হাসি।

সরেজমিনে চর আমানউল্যা ইউনিয়নের কাটাবুনিয়া গ্রামে দেখা গেছে, হলুদের আভায় ছেয়ে আছে মাঠের পর মাঠ। যতদূর দুই চোখ যায় দিগন্ত বিস্তৃত সূর্যমুখীর বাগান। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন সূর্য ঝলমলিয়ে হাসছে। সূর্য যখন যেদিকে হেলছে, সূর্যমুখী ফুলও সেদিকে হেলে পড়ে। এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মৌমাছির দল যেমন ছুটে আসছে তেমনি প্রকৃতিপ্রেমীরাও আসেন দল বেঁধে।

জানা গেছে, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। অল্প খরচে অধিক ফলন এবং ভালো দাম পাওয়ায় পাশের উপজেলায়ও সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। সূর্যমুখী ফুলের শুকনো বীজ থেকে উৎপাদিত হয় তেল। সূর্যমুখী ফুল থেকে স্বাস্থ্যকর ভোজ্যতেল উৎপাদন করা সম্ভব। পাশাপাশি এ ফুলের উচ্ছিষ্ট থেকে বের হয় ‘খইল’ নামের এক ধরনের গোখাদ্য। দেশের ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে সূর্যমুখী ফুলের রয়েছে অপার সম্ভাবনা। তুলনামূলক লাভজনক হওয়ায় সূর্যমুখীর আবাদে উৎসাহী হয়ে উঠছেন উপজেলার কৃষকরা।

কৃষক মো. মোস্তফা  বলেন, আগে এ জমি ইটভাটা হিসেবে ব্যবহার হতো। পরে দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিল। এবার আমরা চিন্তা করলাম এখানে সূর্যমুখী চাষ করে দেখি। ফলাফল দেখে আমরা নিজেরাই অবাক। গাছে গাছে ফুটেছে বড় বড় ফুল। ফুলের বীজে রয়েছে প্রচুর তেল, যা বিক্রি করেও ভালো আয় হবে।

কৃষক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, লবণাক্ত হওয়ায় এই জমিতে কোনো ফসল হতো না। এছাড়া জমিতে দীর্ঘদিন ইটভাটা ছিল। তারপর পতিত জমি হিসেবে এটা পড়ে ছিল। কৃষি অফিসার আমাদের বললেন এমন জমিতেও সূর্যমুখী আবাদ হয়। তিনি সার বীজ দিয়েছেন, আমরা আবাদ করেছি। ফলন ভালো হওয়ায় আমরা খুশি।

সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ  বলেন, ইটভাটার জমি হওয়ায় পতিত জমিতে চাষাবাদের জন্য কৃষকরা সাহস পেতেন না। আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়েছি। লবণাক্ত জমিতে কোনো পানি ছাড়াই সূর্যমুখী আবাদ সম্ভব। এছাড়া সরকারি প্রণোদনার আওতায় বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে। এই সফলতা দেখে এখন অনেকেই সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। চরাঞ্চলের অনাবাদি জমি ব্যবহারের নতুন একটি সম্ভাবনার দিক খুলে দিয়েছে এই উদ্যোগ।

ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে সূর্যমুখী চাষ আরও বিস্তৃত করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেজন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ, বীজ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা বাড়ানো হবে। সূর্যমুখী থেকে তেল খেয়ে কৃষক সুস্থ থাকবে এবং অতিরিক্ত তেল বিক্রি করে লাভবান হবে। এতে করে দেশের বাইরে থেকে তেল আমদানি কমে যাবে এবং আমাদের দেশও লাভবান হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top