বুধবার, ৯ই জুলাই ২০২৫, ২৫শে আষাঢ় ১৪৩২


বিলিয়ন ডলার রপ্তানি বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে


প্রকাশিত:
৯ জুলাই ২০২৫ ১২:২৮

আপডেট:
৯ জুলাই ২০২৫ ১৪:১২

ছবি সংগৃহীত

বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের একক বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। সদ্য বিদায়ী ২০২৪–২৫ অর্থবছরে দেশটিতে ৮৭৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এই রপ্তানি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের তুলনায় ১০৯ কোটি ডলার বা ১৪ শতাংশ বেশি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরের তথ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানির এই চিত্র পাওয়া গেছে।

এবার যুক্তরাষ্ট্রে এক বছরে রপ্তানি বৃদ্ধির হিসাবটি তুলনা করা যাক। দেশটিতে গত অর্থবছরে যে পরিমাণ রপ্তানি বেড়েছে, তা একই সময়ে ১৫৪টি দেশে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির সমান। তার মানে হলো, ১৫৪টি দেশে গত অর্থবছরে ১০৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ।

এমন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি আয়ের খবর পাওয়া গেছে, যখন দেশটি বাংলাদেশের পণ্যের ওপর নতুন করে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। দুই দেশের সঙ্গে আলোচনায় সমঝোতা না হলে আগামী ১ আগস্ট থেকে এই শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাবে, ২০২৪–২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ২০১টি দেশ ও অঞ্চলে মোট ৪ হাজার ৬৫৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানির প্রায় ১৯ শতাংশের গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় ৭৫৮ কোটি ৫০ লাখ ডলারের। তৈরি পোশাক ছাড়া অন্যান্য পণ্য রপ্তানি হয়েছে ১১৭ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের। অবশ্য রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রপ্তানির যে হিসাব দিয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রে গত অর্থবছরে ৮৬৯ কোটি ডলারের রপ্তানির তথ্য রয়েছে। সংস্থাটির হিসাবে, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল প্রায় ৭৬০ কোটি ডলার। এ হিসাবেও এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ১০৯ কোটি ডলারের রপ্তানি বেড়েছে।

সবচেয়ে বেশি বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রেই

মোট রপ্তানি মূল্যের হিসাবে সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি বেড়েছে জার্মানিতে। এনবিআরের হিসাবে, জার্মানিতে ২০২৪–২৫ অর্থবছরে রপ্তানি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৪৩ কোটি ডলার বেড়ে ৫৩২ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। দেশটিতে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির হার ৯ শতাংশ। তৃতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি বেড়েছে নেদারল্যান্ডসে। দেশটিতে গত অর্থবছরে রপ্তানি ৪২ কোটি ডলার বেড়ে ২৩৬ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে।

গত অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ২০১টি দেশ ও অঞ্চলে পণ্য রপ্তানি হলেও বিলিয়ন ডলারের বাজার মূলত ১২টি। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বাকি ১১টি দেশ হলো জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, হলান্ড, ভারত, ইতালি, কানাডা, জাপান ও ডেনমার্ক।

তৈরি পোশাকের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক প্যাসিফিক জিনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর প্রথম আলোকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজার বড়। এই বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বাড়তি ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কারণে এই বড় বাজার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ জন্য এখন সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা চালানো উচিত, যাতে অন্তত ভিয়েতনামসহ প্রতিযোগী দেশগুলোর চেয়ে শুল্কহার আমাদের বেশি না হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ রপ্তানিকারক কারা

যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় বাজারে রপ্তানির জন্য দেশীয় রপ্তানিকারকদের মধ্যেও প্রতিযোগিতা আছে। এনবিআরের হিসাবে, গত অর্থবছরে দেশটিতে ২ হাজার ৩৭৭টি প্রতিষ্ঠান পণ্য রপ্তানি করেছে। অর্থবছর শেষে দেখা যায়, দেশটিতে রপ্তানিতে শীর্ষে রয়েছে আশুলিয়ায় অবস্থিত রিফাত গার্মেন্টস। হা–মীম গ্রুপের এই কারখানা থেকে গত অর্থবছর যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ২৭ কোটি ১৫ লাখ ডলারের পণ্য। হা–মীম গ্রুপের মোট রপ্তানির সিংহভাগের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র।

দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আশুলিয়ার আরেক প্রতিষ্ঠান জিএবি লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি রপ্তানি করেছে ১৮ কোটি ডলারের পণ্য। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রামের নাসিরাবাদের এশিয়ান ডাফ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান চিটাগং এশিয়ান অ্যাপারেলস লিমিটেড।

যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানির শীর্ষ তালিকার পাঁচটি প্রতিষ্ঠানই তৈরি পোশাকের। তৈরি পোশাক ছাড়াও শীর্ষে দশে জায়গা করে নিয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। এই দুটি হলো নীলফামারী সদরের উত্তরা ইপিজেডের প্রতিষ্ঠান এভারগ্রিন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরি।

ডিএম /সীমা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top