এনবিআরের দুই বিভাগে সচিব নিয়োগে নতুন নীতিমালার হচ্ছে
প্রকাশিত:
১৩ জুলাই ২০২৫ ১৪:১৬
আপডেট:
১৩ জুলাই ২০২৫ ২০:১৭

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) কার্যকরভাবে পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহে গতি আনার লক্ষ্যে এনবিআরের দুটি বিভাগে সচিব নিয়োগে নতুন নীতিমালার প্রস্তাবনা তৈরি করছে সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
রোববার (১৩ জুলাই) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কমিটির আহ্বায়ক এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এনবিআরকে দুটি ভাগে ভাগ করে, রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব বাস্তবায়ন বিভাগ— আলাদাভাবে সচিব পদে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। এতে যেন দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা নিয়োগ পান এবং রাজস্ব আহরণ ও গ্রাহকসেবায় কোনো বিঘ্ন না ঘটে, সে বিষয়গুলো মাথায় রেখেই প্রস্তাব তৈরি হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য ও শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
ফাওজুল কবির বলেন, আমরা এনবিআর ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাদের মূল বক্তব্য ছিল এনবিআরকে অটুট রাখতে হবে এবং দুটি বিভাগের নেতৃত্বে যেন কেবল ক্যাডার কর্মকর্তারাই আসেন। যদিও তারা পূর্বের কিছু অবস্থানে অনুশোচনা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে এনবিআর নিয়ে অনেক জটিলতা ও ক্ষোভ রয়েছে। ব্যবসায়ী মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে— তারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন এবং গত দুই মাসে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এনবিআরের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে— যেমন বাধ্যতামূলক অবসর, সাময়িক বরখাস্ত এবং দুদকের তদন্ত কার্যক্রম। ব্যবসায়ীরা এনবিআর সংস্কারে সমর্থন দিলেও চায় শাস্তির বিষয়গুলো আরও কাঠামোবদ্ধ ও ধীরস্থির হোক।
এনবিআর অধ্যাদেশ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, আমরা অধ্যাদেশ ঘেঁটে দেখেছি, সেখানে কিছু মৌলিক অসংগতি রয়েছে। যেমন— ‘সরকার উপযুক্ত ব্যক্তিকে সচিব পদে নিয়োগ দেবে’— এই ‘উপযুক্ত ব্যক্তি’ কে হবে, সেটাই পরিষ্কার নয়। আবার, রাজস্ব আহরণে অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও এই যোগ্যতা কীভাবে নির্ধারিত হবে, তা স্পষ্ট নয়। এসব অস্পষ্টতা দূর করতেই আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়কে একটি পরামর্শ দেব।
তিনি আরও বলেন, আমরা এনবিআরের মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করব। বিশেষ করে আয়কর ও কাস্টমস কার্যক্রম। এরপর নীতিমালা চূড়ান্ত করতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে একটি সুপারিশ প্রদান করব। তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, এনবিআরে চাকরি করে— এমন কথা শুনলেই অনেকে হাসে। কেন হাসে, সেটা আমরা সবাই জানি। তাই এনবিআরকে টিকিয়ে রাখার চাইতে কার্যকর দুটি বিভাগ— রাজস্ব নীতি ও বাস্তবায়ন— গঠন করাই হবে বেশি যৌক্তিক। এই দুটি বিভাগের মধ্যে কারা দায়িত্বে থাকবেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা জরুরি।
কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, দুই বিভাগ গঠন হলেও তা কোনো নির্দিষ্ট ক্যাডারের একচেটিয়া কর্তৃত্বে থাকবে না বলেও স্পষ্ট করেন উপদেষ্টা। প্রশাসন ক্যাডার ও কর ক্যাডার— উভয় পক্ষকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আহ্বান জানান তিনি।
ডিএম /সীমা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: