শনিবার, ৯ই আগস্ট ২০২৫, ২৫শে শ্রাবণ ১৪৩২


ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক: ভারতের সংকটে স্বস্তিতে বাংলাদেশের


প্রকাশিত:
৯ আগস্ট ২০২৫ ১২:৫৬

আপডেট:
৯ আগস্ট ২০২৫ ১৮:০৫

ছবি সংগৃহীত

ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক কার্যকর হয়েছে। প্রতিযোগী দেশগুলোর ওপর আরোপিত শুল্ক বিবেচনায় বাংলাদেশ এখন বেশ স্বস্তিতে। ভারতের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপ বাংলাদেশকে বাড়তি সুবিধা দিতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ৮০ ভাগই তৈরি পোশাক।

বাংলাদেশের ওপর পাল্টা শুল্কের পরিমাণ এখন ২০%। আগের ১৫% মিলিয়ে মোট ৩৫%। প্রথমে (২ এপ্রিল) অতিরিক্ত শুল্ক ধরা হয়েছিল ৩৭%। পরে ৩৫ এবং সর্বশেষ আলোচনায় তা ২০% এ নেমে আসে। কিন্তু ভারতের ওপর এখন ৫০% শুল্ক আরোপ করায় বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। কারণ, বাংলাদেশ মূলত যুক্তরাষ্ট্রে টি-শার্টের মতো বেসিক গার্মেন্টস রপ্তানি করে। ভারতও তাই।

ভারতের ওপর প্রথমে ২৫% শুল্ক আরোপ করা হলেও রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানির “শাস্তি” দিতে আরও ২৫% বাড়িয়েছেন ট্রাম্প। ফলে, ভারতকে এখন “অতিরিক্ত” মোট ৫০% শুল্ক দিতে হবে।

পাকিস্তানের ওপর নতুন আরোপ করা শুল্ক ১৯%। পাকিস্তানের এই সারিতে আরো আছে কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ও ফিলিপাইন্স। ২০% এ বাংলাদেশ ছাড়াও আছে শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম। ২৫% এ আছে ব্রুনাই, কাজাখাস্তান, মলদোভা ও টিউনিসিয়া। চীনের ওপর শুল্ক আরও বেশি হতে পারে।

প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ একই অবস্থানে আছে

ভারত ছাড়া বাংলাদেশের পোশাক খাতে আরো দুইটি প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ হলো, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া। তাদের আর বাংলাদেশের শুল্ক হার একই আছে। ফলে, প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ একই অবস্থানে আছে।

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস)-এর গবেষণা পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির ডয়চে ভেলেকে বলেন, “বাংলাদেশ এখন দুইটি দিক দিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। বাংলাদেশ ও ভারত একই ধরনের পোশাক রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্রে।আর ভারতের ওপর এখন অতিরিক্ত শুল্ক ৫০%। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রে বাড়বে। ভারতের অর্ডার বাংলাদেশে চলে আসবে। কারণ, ভারত থেকে পোশাক নিলে তার দাম বেশি পড়বে।আর বায়াররা বাংলাদেশ থেকে যে সুবিধা পায়, ভারত থেকে তা পায় না।”

"তবে বাংলাদেশে বেশি অর্ডার আসলে তা নেয়ার মতো প্রস্তুতি থাকতে হবে বাংলাদেশের। ২০১৪ সালেও বাংলাদেশে বাড়তি অর্ডার এসেছে। কিন্তু বাংলাদেশ প্রস্তুতির অভাবে তা নিতে পারেনি। ওই অর্ডার তখন চলে যায় ভিয়েতনাম ও শ্রীলঙ্কায়। এবার যেন সেরকম না হয়,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা শুল্ক কার্যকরের শেষ পর্যায়ের সুযোগও নিয়েছেন। কারণ, যেসব পণ্য নির্ধারিত সময়ের আগে শিপমেন্ট হয়ে যাবে, সেসবের ওপর এই শুল্ক কার্যকর হবে না। ফলে রপ্তানিকারকরা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে শুল্ক কার্যকরার আগে যতটা সম্ভব আগাম রপ্তানি করেছেন। যেসব অর্ডার স্থগিত হয়েছে, তা আবার সচল হয়েছে। তাই কয়েকদিন ধরে পণ্য আগাম পৌঁছানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছে বিভিন্ন কারখানা। যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখী পণ্যবোঝাই ট্রাক-লরিকে বন্দরে প্রবেশ এবং পণ্যছাড়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দিচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে প্রতিদিন ৮০০ কন্টেইনার পরিমাণ অতিরিক্ত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, উৎপাদনের শেষ পর্যায়ে থাকা পণ্যের বড় একটি অংশ ১ আগস্টের আগেই বন্দর থেকে শিপমেন্ট হয়েছে।

তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন

বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল ডয়চে ভেলেকে বলেন, "আসলে শুল্ক আরোপ করার প্রথম ঘোষণার পর বায়াররা থমকে গিয়েছিলেন। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তাই তারা তাদের অর্ডার স্থগিত করেছিলেন। কিন্তু এখন আবার সেই অর্ডার চালু হয়েছে। আমরা এখন প্রতিযোতিায় একই অবস্থানে আছি এবং ভারতের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছি। কিন্তু এই অতিরিক্ত শুল্কের কারণে তো পোশাকের দাম বাড়বে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাড়তে শুরু করেছে। ফলে পোশাকের চাহিদা সেখানে প্রাথমিকভাবে কিছুটা হলেও কমছে।”

তার কথা, "এখন ক্রেতারা চাইছেন ভোক্তাদের ওপর বাড়তি দাম না চাপিয়ে কীভাবে বাজার ধরে রাখা যায়। ফলে, এখানে একটা বড় ধরনের দরকষাকষি শুরু হবে পোশাক শিল্প মালিকদের সাথে বায়ারদের। আমরা তো খরচ কমাতে পারবো না। তাই আমাদের ওপর যত শতাংশ শুল্ক চাপাবে, ততটুকু আমাদের মুনাফা কমবে। এখন সেটা কোথায় যায় তা দেখার আছে।”

বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, "আমাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও ভিয়েতনাম। চীন আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। কারণ, আমরা যে ধরনের পোশাক তৈরি করি, তারা তা করে না। ভারতের শুল্ক এখন অনেক বেশি। ভিয়েতনামের আমাদের সমান। কিন্তু ভিয়েতনামের কিছু সমস্যা আছে। তারা অধিকাংশ কাঁচামাল আনে চীন থেকে। সেখানে একটা বিধিনিষেধ থাকবে। ফলে আমাদের এখানে অর্ডার বাড়বে। কিন্তু আমরা ভালো অবস্থানে থাকবো কিনা তা নির্ভর করছে সরকারে সিদ্ধান্তের ওপর। গ্যাস ও বিদ্যুৎ সুবিধা, ব্যাংক ঋণ। এগুলো না পেলে তো সুযোগ কাজে লাগানো সম্ভব হবে না।”

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান চলতি সপ্তাহেই এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক ৩৫% থেকে কমিয়ে ২০% নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে, ওই শুল্ক থেকে অব্যাহতি পাবেন তারা, যাদের পণ্যে অন্তত ২০% মার্কিন কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক সংক্রান্ত সর্বশেষ নির্বাহী আদেশে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যদি পণ্যে ন্যূনতম ২০% মার্কিন কাঁচামাল, যেমন; অ্যামেরিকান তুলা ব্যবহার হয়, তাহলে অতিরিক্ত ২০% শুল্ক প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ, অ্যামেরিকার কাঁচামাল ব্যবহার করলে আমরা বাড়তি শুল্ক থেকে মুক্তি পাবো। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া পোশাকের ৭৫% তুলার তৈরি।”

বাংলাদেশে দুই ধরনের তৈরি পোশাক আছে। নিট এবং ওভেন। নিট-এর কাঁচামালের অধিকাংশই দেশে তৈরি হয়। আর ওভেন-এর ৮০ ভাগ কাঁচামালই দেশের বাইরে থেকে আনা হয়। আর তা আনা হয় প্রধানত ভারত ও চীন থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের যে ট্রান্সশিপমেন্ট ট্যারিফ বলতে আরেকটি বিষয় আছে, তাতে ওই দুইটি দেশ থেকে কাঁচামাল আনা কমাতে হবে। নয়তো আরো ৪০% শুল্কের আরেকটি খাঁড়া আছে বলে জানান অর্থনীতিবিদরা।

বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তালিকা অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ৯৮ ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে প্রচলিত পণ্যের বাইরে অনেক অপ্রচলিত পণ্যও রপ্তানি হয়। তবে রপ্তানি আয়ের ৮০ ভাগই আসে তৈরি পোশাক থেকে।রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ৯.১ ভাগ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩.৭৯%। ফলে, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাকের বাাজার বাড়ছে।

আমদানির পরিমাণ অনেক কম

এ বছরের প্রথম দুই মাসে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হয়েছে, সেই তুলনায় আমদানির পরিমাণ অনেক কম। ইউনাইটেড স্টেটস সেন্সাস ব্যুরো বলছে, জানুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ ২০৩.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ পণ্য আমদানি করেছে এবং ফেব্রুয়ারিতে এনেছে মাত্র ৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কাছে ওই দুই মাসে মোট ২৯০.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করতে পেরেছে। সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসেই এই দুই দেশের মাঝে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৭০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি পাঠিয়েছে তৈরি পোশাক। আর বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবচেয়ে বেশি এনেছে সয়াবিন। গত বছর বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৮৩৬ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২২১ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ।

এই হিসাবে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য-ঘাটতির পরিমাণ ৬১৫ কোটি ডলার।

পাল্টা শুল্ক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় টার্গেট ছিল বণিজ্য ঘাটতি কমানো, তার দেশের পণ্য রপ্তানি বাড়ানো। যে ট্রান্সশিপমেন্ট শুল্কের কথা এখন আবার জানা যাচ্ছে, তা-ও আবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে কাঁচামাল রপ্তানি বাড়ানোর জন্য। যুক্তরাষ্ট্র ফিনিশড প্রোডাক্ট এবং কাঁচামাল দুইটির রপ্তানিই বাড়াতে চায়। সেই কারণেই শুল্ক আলোচনায় ফল পেতে শেষ দফা আলোচনায় যাওয়ার আগে সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২.২০ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির অনুমোদন দেয় । যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি নতুন বোয়িং বিমান আনারও চুক্তি করার কথা । এর আগে প্রতি বছর পাঁচ লাখ টন এলএনজি আমদানির চুক্তি করা হয়েছে। এছাড়াও সয়াবিন ,তুলা, ডাল আমদানিরও নতুন চুক্তি হচ্ছে। আর স্টারলিংক বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। বাংলাদেশকে এখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি আরো বাড়াতে হবে।

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক ছাড়াও জুতা, টুপি, তাঁবু, ব্যাগ, আসবাব, খাদ্যপণ্য, হিমায়িত পণ্য রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্রে। গত অর্থবছরে ১৭৬টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান রপ্তানির জন্য শতভাগ দেশটির ওপর নির্ভরশীল ছিল। মোট ৭০৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এককভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৫০% এর বেশি রপ্তানি করেছে, এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩১৯টি।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্যের বাজারও বাড়ছে। আর বাংলাদেশি চামড়াজাত পণ্যেরও একক দেশ হিসাবে সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত মোট চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির ২৩ শতাংশই হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। ওই সময়ে মোট ২৮৯.৬ মিলিয়ন ডলারের চামড়াজাত পণ্য সেখানে গেছে।

পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, "শুধু তৈরি পোশাক নয়, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে আরো যেসব পণ্য যায়, নেগুলোও এখন প্রতিযোগিতায় একইভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, বাড়তি শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বাড়বে। বাংলাদেশের শিল্প উৎপাদনে, বিশেষ করে পোশাক শিল্পে অন্যদেশের তুলনায় শুধুমাত্র সস্তা শ্রম ছাড়া অন্য দক্ষতা কম। ফলে, দক্ষতা বাড়িয়ে দাম কম রাখার ব্যাপারে বাংলাদেশকে আরো অনেক কিছু করতে হবে। আর বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে, যাতে অতিরিক্ত শুল্ক আরো কমানো যায়। কারণ, শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বাড়বে। অথবা মুনাফা কমবে। আর ভারত যে বসে থাকবে, তা নয়। তারাও আলোচনা চালাবে শুল্ক কমাতে।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের যে শুল্ক-চুক্তি হয়েছে, তা এখানো প্রকাশ করা হয়নি। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বুধবার বলেছেন, "যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে 'নন-ডিসক্লোজার' শুল্ক চুক্তি হচ্ছে, তা এখনই প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এই চুক্তি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডাব্লিউটিও)-র মতো নয়, বরং একটি দেশের সঙ্গে অন্য দেশের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি। তাই এতে প্রতিযোগী দেশগুলোর কথা বিবেচনায় রাখতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, "চুক্তির খসড়া এখনো তৈরি হচ্ছে। শুল্কহার আরও কম হলে ভালো হতো, তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান ভালো। শুল্কহার ২০ শতাংশ হওয়ার কথা থাকলেও চুক্তির পর কোথায় কী কমানো যায়, সেই বিষয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।”

ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, "আসলে চুক্তির শর্তগুলো প্রকাশ হলে আরো বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত নেয়া আরও সহজ হবে। তবে আমাদের এই অবস্থা থেকে শিক্ষা নেয়ার দরকার আছে। আমাদের পোশাকসহ অন্যান্য পণ্যের নতুন বাজার খুঁজতে হবে। আর যুক্তরাষ্ট্রের পর অন্য দেশ এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিলে তখন আমরা কী করবো। সেজন্য আমাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। শুধু সস্তা শ্রমের ওপর নির্ভর করলে চলবে না।”

বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮৪ ভাগই আসে তৈরি পোশাক থেকে। একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। গত বছর মোট রপ্তানি পোশাকের ১৮% ছিল যুক্তরাষ্ট্রে। গত বছর বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ৭৩৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top