স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
জন্মনিয়ন্ত্রণ সচেতনতায় দাইমাদের কাজে লাগানোর পরামর্শ
 প্রকাশিত: 
 ২৯ জানুয়ারী ২০২৫ ০৮:২৫
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১০:৫১
                                মেয়ে সন্তানের পরিবর্তে ছেলে সন্তানের প্রত্যাশায় দেশে এখনো জনসংখ্যার হার বেড়ে চলেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। এ পরিস্থিতিতে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে দাইমাদের কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি মিলনায়তনে উবিনীগ ও নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা আয়োজিত ‘গ্রামীণ নারীদের মাতৃস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও দাইমাদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নূরজাহান বেগম বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তবে এখনো সন্তান গ্রহণ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা কুসংস্কার রয়ে গেছে। এখনো মানুষ ছেলে সন্তান লাভের আশায় একের পর এক সন্তান গ্রহণ করতে থাকেন। এক্ষেত্রে দাইমাদেরও অনেক ভূমিকা রয়েছে। আমরা যদি তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে সচেতনতা পৌঁছে দিতে পারি, তাহলে অনেকটাই জনসংখ্যার সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা দেখছি প্রতিনিয়তই নানা ধরনের রোগবালাই বেড়ে চলেছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীদের জায়গা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমরা ছুটে চলছি ওষুধ আর চিকিৎসকদের পেছনে। কিন্তু আমরা চাইলেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে নিজেকে সুস্থ রাখতে। অনেকগুলো রোগ আছে যেগুলো ইচ্ছে করলেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। যক্ষ্মা, ডায়রিয়া, কলেরা, ডেঙ্গুসহ প্রায় অধিকাংশ রোগই প্রতিরোধযোগ্য। আমরা জানি কোন মশার কারণে ডেঙ্গু ছড়ায়। আমরা যদি নিজেদের চারপাশ পরিষ্কার রাখতে পারি, এতেই কিন্তু ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই কমে আসতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা দেখছি হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগীদের হাসপাতালগুলোতে জায়গা দেওয়া যায় না। কিডনি রোগীদের একেকটা ডায়ালাইসিস করতে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা চলে যাচ্ছে। জমি-ভিটা বিক্রি করে চিকিৎসা করাচ্ছে। এ অবস্থা কিন্তু আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক। আমাদেরকে অবশ্যই প্রিভেনশনে যেতে হবে।
সচেতনতার পরামর্শ দিয়ে নূরজাহান বেগম বলেন, আমাদেরকে চিনি-লবণ কম খেতে হবে। আমরা যে বাচ্চাদের আদর করে চিপস কিনে দিচ্ছি, জুস কিনে দিচ্ছি, সেগুলোতে কী পরিমাণ লবণ-চিনি আছে তা আমরা ভাবতেও পারি না। এই লবণ-চিনি বাদ দিয়ে দিলে আমরা অনেক রোগ থেকেই মুক্তি পাব। সেইসঙ্গে তামাক বাদ দিয়ে দিলে ক্যান্সারসহ আরও অনেক রোগবালাই কমে যাবে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা জানি ঢাকা মেডিকেলে মাত্র সিট আছে ২৬০০ কিন্তু সবসময় রোগী ভর্তি থাকে চার হাজারের বেশি। পুরো দেশকে তো আমরা হাসপাতাল বানাতে পারব না। তাই আমরা সবাই যেন প্রিভেনশন গুরুত্ব দিই। বিশেষ করে বাচ্চাদের ছোট থেকেই কম লবণ-চিনিতে অভ্যস্ত করুন। তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুস্থ থাকতে পারবে।
অনুষ্ঠানে সভাপ্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সামিনা চৌধুরী। এসময় দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা দাইমারা উপস্থিত ছিলেন।

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: