থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘর্ষে নিহত ১২
প্রকাশিত:
২৪ জুলাই ২০২৫ ১৬:৪২
আপডেট:
২৬ জুলাই ২০২৫ ০৫:২৩

সীমান্ত বিরোধ নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনার পর সংঘর্ষে জড়ালো দুই প্রতিবেশী থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সীমান্তের একটি বিতর্কিত এলাকায় সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১২ জন নিহত হওয়ার খবর পওয়া গেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে থাইল্যান্ডের সুরিন প্রদেশের দক্ষিণে বিতর্কিত অঞ্চলে অবস্থিত প্রাচীন তা মুয়েন থম মন্দিরের কাছে একটি থাই সেনা ঘাঁটিতে কম্বোডিয়ান সেনাদের গুলি চালানোর অভিযোগ করেছে থাইল্যান্ড। তবে কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, থাই সৈন্যদের বিনা উস্কানিতে অনুপ্রবেশের পর তাদের সৈন্যরা আত্মরক্ষায় গুলি চালায়।
থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সোমসাক থেপসুথিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কম্বোডিয়ান বাহিনীর কামানের গোলাবর্ষণে এক শিশুসহ ১১ জন বেসামরিক নাগরিক এবং একজন সৈন্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া ২৪ জন বেসামরিক নাগরিক এবং সাতজন সামরিক কর্মীসহ ৩১ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে কম্বোডিয়া এখনও পর্যন্ত হতাহতের কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি।
রয়্যাল থাই আর্মি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কম্বোডিয়া থেকে প্রথমে কামান ও রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে, এর জবাবে থাইল্যান্ড একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান যুদ্ধবিমান কম্বোডিয়ায় হামলা চালিয়ে একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করে দিয়েছে এবং নিরাপদে দেশে ফিরে এসেছে। বিতর্কিত সীমান্তে আরও ছয়টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়েছে।
থাই সেনাবাহিনীর উপ-মুখপাত্র রিচা সুকসুওয়ানন সাংবাদিকদের বলেন, ‘থাইল্যান্ডে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর অস্ত্র ব্যবহারের জন্য কম্বোডিয়ার নিন্দা জানাচ্ছে থাই সেনাবাহিনী। অমানবিক কর্মকাণ্ড থেকে সার্বভৌমত্ব এবং আমাদের জনগণকে রক্ষা করতে থাইল্যান্ড প্রস্তুত। আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী কম্বোডিয়ার সামরিক লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়েছি।
অন্যদিকে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম খেমার টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনী দাবি করেছে তারা একটি থাই এফ-১৬ যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘থাই যুদ্ধবিমান একটি রাস্তায় দুটি বোমা ফেলেছে, যা কম্বোডিয়ার সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিরুদ্ধে থাইল্যান্ডের বেপরোয়া এবং নৃশংস সামরিক আগ্রাসন।’
দেশটির প্রধানমন্ত্রী হুন মানেট বলেছেন, ‘কম্বোডিয়া সর্বদা শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তির নীতিতে অটল, কিন্তু এই পরিস্থিতিতে, সশস্ত্র আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সামরিক প্রতিক্রিয়া জানানো ছাড়া আমাদের আর কোন বিকল্প নেই।’
অন্যদিকে কম্বোডিয়া পূর্বপরিকল্পিত ভাবে সামরিক আগ্রাসন শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মোকাবেলা করার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় জোট আসিয়ান-এর সভাপতি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম উভয় দেশকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি উভয় দেশের নেতাদের সাথে তাদের বিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের জন্য কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন।
চীনও এই সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, তারা উত্তেজনা কমাতে ভূমিকা রাখতে ইচ্ছুক।
সূত্র: রয়টার্স, আনাদোলু
ডিএম //সীমা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: