শনিবার, ২৬শে জুলাই ২০২৫, ১০ই শ্রাবণ ১৪৩২


থাইল্যান্ডের সঙ্গে যুদ্ধ ছাড়া কোনও উপায় নেই, হুঙ্কার কম্বোডিয়ার


প্রকাশিত:
২৪ জুলাই ২০২৫ ১৮:৪৩

আপডেট:
২৪ জুলাই ২০২৫ ১৮:৪৯

কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেন

সীমান্ত সংকট সমাধানে এই মুহূর্তে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডের সঙ্গে যুদ্ধ ব্যাতীত আর কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ হুন সেন। সেই সঙ্গে নিজ দেশের জনগণকে শান্ত থাকা এবং আতঙ্কগ্রস্ত না হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার  ( ২৪ জুলাই ) সকালের দিকে এক ফেইসবুক পোস্টে হুন সেন বলেন, “আজ থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে আগ্রাসী হামলা চালিয়েছে। এটা তাদের পরিকল্পিত পদক্ষেপ, কারণ নির্ভরযোগ্য সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি যে গতকাল থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ড এই হামলার নির্দেশ দিয়েছিল।”

ফেইসবুকে এই স্ট্যাটাস দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর এক ভিডিও বার্তায় কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, “থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী বলেছিল যে তারা সীমান্ত এলাকার তা মোয়ান থম মন্দিরের প্রবেশপথ বন্ধ করে দেবে। আজ সকালের বিমান অভিযানের মাধ্যমে তা তারা করেছে।”

“এই মুহূর্তে থাইল্যান্ডের সঙ্গে যুদ্ধ ব্যাতীত আমাদের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই। প্রিয় দেশবাসীকে বলছি, দয়া করে আতঙ্কগ্রস্ত হবেন না। চাল কিংবা খাবারের দোকানগুলোতে অতিরিক্ত ভিড় করবেন না, পণ্য মজুত কিংবা উচ্চমূল্যে পণ্য বিক্রয় করা থেকে বিরত থাকবেন।”

কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর সাবেক জেনারেল হুন সেন ১৯৮৫ সালে প্রথম দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন এবং ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি এ পদে ছিলেন। পরে ১৯৯৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ২৫ বছর কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন হুন সেন।

বর্তমানে কম্বোডিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের প্রেসিডেন্ড পদে আছেন তিনি। হুন সেনের আর একটি পরিচয়— তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং কম্বোডিয়ার সাবেক উপ সেনাপ্রধান হুন মানেতের বাবা।

প্রসঙ্গত, এমারেল্ড ট্রায়াঙ্গল বা পান্না ত্রিভুজ নামের একটি ভূখণ্ড নিয়ে ১১৮ দ্বন্দ্ব চলছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে। থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও লাওসের সীমানা মিলিত হয়েছে পান্না ত্রিভুজে। প্রাচীন মন্দির ও ধর্মীয় স্থাপনাসমৃদ্ধ পান্না ত্রিভুজকে থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া উভয়েই নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে দাবি করে।

এই সংকটের সূত্রপাত গত শতকের প্রথম দিকে। ওই সময় ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে ছিল কম্বোডিয়া। ১৯০৭ সালে কম্বোডিয়ার একটি মানচিত্র প্রকাশ করে ফ্রান্স, সেখানে পান্না ত্রিভূজকে কম্বোডীয় ভূখণ্ড হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। থাইল্যান্ড সেই সময়েই এর প্রতিবাদ জানিয়েছিল।

পরে ১৯৫৩ সালের ৯ নভেম্বর ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে কম্বোডিয়া। কিন্তু স্বাধীনতার পরও পান্না ত্রিভূজকে নিজেদের দখলে রাখে দেশটির সরকার। ফলে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ক আর স্বাভাবিক হয়নি দেশটির।

দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে সীমান্ত সংঘাতের পর ১৫ বছর আগে যুদ্ধবিরতিতে গিয়েছিল দুই দেশ। কিন্তু গত মে মাসে কম্বোডিয়ার এক সেনা থাই সীমান্তের কাছে নিহত হওয়ার পর ফের উসকে ওঠে উত্তেজনা।

গতকাল বুধবার কম্বোডিয়া সীমান্তের কাছে ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে এক থাই সেনা গুরুতর আহত হন। তারপর আজ বৃহস্পতিবার সকালে কম্বোডিয়ার দুই সেনা স্থাপনায় বিমান অভিযান চালায় থাইল্যান্ড।

সেই হামলার জবাবে কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী থাই প্রদেশ বান নাম ইয়েনে রকেট হামলা চালায়কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনী। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন।

সূত্র : সিএনএন

ডিএম /সীমা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top