রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতকে ‘মোদির যুদ্ধ’ বলল হোয়াইট হাউস
প্রকাশিত:
২৮ আগস্ট ২০২৫ ১৩:০২
আপডেট:
২৮ আগস্ট ২০২৫ ১৯:০২

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে “মোদির যুদ্ধ” বলে অভিহিত করেছে হোয়াইট হাউস। হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো এই মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে যে অর্থ প্রদান করছে, মস্কো তা যুদ্ধ চালাতে ব্যবহার করছে।
ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার ঘণ্টা কয়েকের মধ্যেই এই মন্তব্য করেন পিটার নাভারো। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার ঘণ্টা কয়েকের মধ্যেই হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে “মোদির যুদ্ধ” বলে অভিহিত করেছেন। তার অভিযোগ, রাশিয়া থেকে ভারতের জ্বালানি কেনাকাটাই মস্কোর সামরিক আগ্রাসনকে উসকে দিচ্ছে।
নাভারো বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করলে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ কমাতে পারে। ব্লুমবার্গ টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাভারো আরও বলেন, “আমি একে মোদির যুদ্ধ বলছি, কারণ শান্তির পথে যাওয়ার একটি বড় অংশ দিল্লির মধ্য দিয়েই যায়।”
এর আগে বুধবার ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, এটি ভারতের রাশিয়া থেকে তেল কেনার নীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। এর আগে চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল, নতুন সিদ্ধান্তে তা দ্বিগুণ অর্থাৎ ৫০ শতাংশ হলো।
নাভারোর অভিযোগ, ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে ‘ডিসকাউন্টে’ তেল কিনে যে অর্থ প্রদান করছে, মস্কো তা যুদ্ধ চালাতে ব্যবহার করছে। এতে ইউক্রেনকে অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা দিয়ে অতিরিক্ত চাপ বহন করতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে।
তিনি বলেন, “ভারতের এই কাজের কারণে আমেরিকার সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে— ভোক্তা, ব্যবসায়ী, শ্রমিক। ভারতের উচ্চ শুল্ক আমাদের চাকরি, কারখানা আর মজুরি কেড়ে নিচ্ছে। এরপর আবার করদাতাদের অর্থ দিয়ে আমাদেরকে মোদির যুদ্ধও চালাতে হচ্ছে।”
নাভারো আরও বলেন, “ভারত চাইলে কাল থেকেই ২৫ শতাংশ শুল্ক ছাড় পেতে পারে— শর্ত একটাই, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে হবে।”
ভারতের ওপর আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক এশিয়ার কোনো দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় পাল্টা শুল্ক। এটি ভারতের যুক্তরাষ্ট্রমুখী মোট রপ্তানির ৫৫ শতাংশের বেশি পণ্যে প্রযোজ্য হবে। যদিও ইলেকট্রনিকস ও ওষুধশিল্পের মতো কিছু পণ্য আপাতত শুল্কমুক্ত থাকছে, তবে পোশাক ও গহনার মতো শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নাভারো বলেন, “আমার কাছে উদ্বেগজনক হলো— ভারত এতটা ঔদ্ধত্যের সঙ্গে বিষয়টি দেখছে। তারা বলছে, আমাদের শুল্ক বেশি নয়, এটা আমাদের সার্বভৌমত্ব, আমরা যার কাছ থেকে চাই তেল কিনব। ভারত, তুমি যদি বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্র হও, তাহলে সেই মতোই আচরণ করো।”
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা চললেও এখনো কোনো সমঝোতা হয়নি। অথচ ভারতই ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে শুল্ক আলোচনায় যাওয়া প্রথম দেশ। মূলত নাভারোর মতোই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও অভিযোগ করেছেন, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে ভারত পরোক্ষভাবে মস্কোর যুদ্ধ চালানোর অর্থই জোগাচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: