অ্যাডভোকেট আলিফের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তির অপেক্ষায় পরিবার
প্রকাশিত:
২৬ নভেম্বর ২০২৫ ১১:০১
আপডেট:
২৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৩:৪৩
চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় সহকর্মীদের সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে নিহত হয়েছিলেন তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। হত্যার এক বছর পূর্ণ হলেও এখনো পুরোদমে শুরু হয়নি বিচার কার্যক্রম। পরিবারের সদস্যদের মতে, মামলার চার্জশিট আদালত গ্রহণ করলেও পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার এবং বিচার শুরুতে দীর্ঘসূত্রতা দেখা দিচ্ছে।
আলিফের সহকর্মী আইনজীবীরাও মনে করছেন—একজন আইনজীবী আদালত এলাকাতেই নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পরও বিচার শুরুর বিলম্ব বিচার ব্যবস্থার প্রতি নতুন করে প্রশ্ন তুলছে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর ও বিচার কার্যক্রম শুরুর দাবিতে আবারও সোচ্চার হয়েছেন নিহতের পরিবার ও সহকর্মীরা।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৬ নভেম্বর আদালত ভবন এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে। ওইদিন প্রথমে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা শুরু হয়েছিল। ঘটনার পর তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় ৩১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
২০২৫ সালের ১ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তখনকার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ৩৮ জনকে আসামি করা হয়। পরে শুনানি শেষে নতুন করে আরও কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় মোট ৩৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। তবে এজাহারের তিন আসামির সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদের অব্যাহতির আবেদন করা হয়।
চার্জশিটে নাম এসেছে চন্দন দাশ মেথর, রিপন দাশ, রাজীব ভট্টাচার্য্য, শুভ কান্তি দাশ, আমান দাশসহ মোট ৩৯ জনের। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে মাত্র ২১ জন, বাকি ১৮ জন এখনো পলাতক।
নিহত আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, আমাদের ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু এক বছরেও বিচার শুরু হলো না। তিনি বলেন, পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার, বিচার দ্রুত শুরু এবং মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
আলিফের ব্যাচমেট ও মামলার আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী জানান, আদালত ইতোমধ্যে ৩৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, আগামী ১ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে। পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আদালত নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের দাবিও জানানো হচ্ছে।
এদিকে, শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের প্রথম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি। সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার জানিয়েছেন, বুধবার ২৬ নভেম্বর সকাল ১০টায় আইনজীবী ভবনের সামনে মানববন্ধন এবং বিকেল ৩টায় সমিতির অডিটোরিয়ামে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: