সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১


লকডাউনের বিকল্প পরামর্শ কারিগরি কমিটির


প্রকাশিত:
১ মে ২০২১ ২২:১৮

আপডেট:
২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:১০

ছবি: সংগৃহীত

মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে অনেক কাবু দেশ। সংক্রমণ রোধে দেশে এখন সরকার ঘোষিত লকডাউন চলমান রয়েছে, যা শেষ হবে ৫ মে। আর এই লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসতে এক্সিট প্ল্যানের পরামর্শ দিয়েছে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

শনিবার (০১ মে) সকালে কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, জাতীয় কারিগরি কমিটির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে লকডাউন পরবর্তী এক্সিট প্ল্যানের পরামর্শ জমা দেওয়া হয়েছে। এগুলোর বাস্তবায়ন না হলে আবারও সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে।

এক্সিট প্ল্যানে যেসব পরামর্শ দিয়েছে কারিগরি পরামর্শক কমিটি সেগুলো হলো-

১. লোকজনকে অবশ্যই মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। ঘর থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন মুখে মাস্ক থাকে। যেখানে ভাইরাসের ঘনত্ব বেশি যেমন: গণপরিবহন, সুপার মার্কেট, বাজার, ব্যাংক, হাসপাতাল এসব জায়গায় কেউ মাস্ক ছাড়া যেতে পারবেন না। মাস্ক না পরলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থাকতে হবে।

২. অফিসে উপস্থিতি অর্ধেক করার প্রস্তাব করেছে জাতীয় পরামর্শক কমিটি। তবে উপস্থিতি এক-তৃতীয়াংশ হলে ভালো হয়। অফিসগুলোতে ভার্চুয়াল কর্মকাণ্ড পরিচালনাকে উৎসাহ দেওয়ার কথা বলেছে কমিটি। এছাড়া অফিসগুলোতে যেন দলবেঁধে খাওয়া-দাওয়া না চলে, সবাই যেন আলাদাভাবে তাদের খাওয়া সম্পন্ন করে সে বিষয়েও বলা হয়েছে।

৩. গণপরিবহন যেন তাদের সক্ষমতার ৫০ শতাংশ যাত্রী বহন করে। এই নিয়ম দীর্ঘদিনের জন্য চালু থাকতে হবে। এছাড়া প্রাইভেটকার এবং তিন চাকার যান্ত্রিক বাহন (সিএনজিচালিত অটোরিকশা) একজন করে যাত্রী বহন করবে। তবে পরিবারের সদস্য হলে দুই জন বহন করতে পারে। অবশ্য রিকশা, মোটরসাইকেল এবং বাইসাইকেলে কোনো সমস্যা নেই।

৪. খাবারের দোকান, মুদি দোকান, মার্কেট এবং শপিংমল দিনের লম্বা সময়ের জন্য খোলা রাখা। স্বল্প সময়ের জন্য খোলা রাখলে মানুষের চাপ বাড়ে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হয়। বেশি সময় ধরে খোলা থাকলে মানুষের ভিড় কম হবে। কাঁচা বাজারগুলো উন্মুক্ত জায়গায় পরিচালনা করতে হবে। রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া যাবে না। হোম ডেলিভারি সার্ভিসকে উৎসাহ দেওয়ার কথা বলেছে কমিটি।

৫. জনসমাবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মসজিদ, মন্দির এবং গির্জায় যাতে ভিড় না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রার্থনায় সীমিত সংখ্যক মানুষ যেতে পারবেন। এছাড়া রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বন্ধ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। যদি করাও হয় তাতে ১০ জনের বেশি মানুষ না রাখার পরামর্শ দিয়ে জাতীয় কমিটি।

৬. যারা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে জীবিকা নির্বাহ করেন তাদের কাজ চালিয়ে নেওয়া যাবে। নিয়োগকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের শারীরিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

৭. কলকারখানার প্রবেশমুখে শ্রমিকদের জন্য স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা রাখতে রাখবে, যাতে করে তারা জীবাণুমুক্ত হয়ে কারখানায় প্রবেশ করতে পারেন। কারখানার ভেতরে মাস্ক পরে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে হবে।

৮. যতদিন পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি না হয় ততদিন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমকে উৎসাহ দিতে হবে।

৯. বিনোদন এবং পর্যটনকেন্দ্রগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত পর্যটনকেন্দ্র খোলা যাবে না।

১০. এছাড়া আইসোলেশন, কন্টাক্ট ট্রেসিং এবং কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে। সংক্রমণ রোধ করার জন্য এটি ভীষণ প্রয়োজন। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টাই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

১১. করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যারা আসবেন তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইসোলেশন নিশ্চিত করতে বলেছে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। করোনা পরীক্ষা করার সুবিধা বাড়াতে হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে যাতে ভিড় না হয়, সেজন্য এর সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top