গণতান্ত্রিক উত্তরণে ঢাকাকে ৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে ডেনমার্ক
প্রকাশিত:
১২ মে ২০২৫ ১৭:৪৬
আপডেট:
১২ মে ২০২৫ ২২:০১

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা ঘোষণা করেছে ডেনমার্ক।
সোমবার (১২ মে) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের মধ্যে রাজনৈতিক পরামর্শ সভা শেষে এ তথ্য জানানো হয়।
রাজনৈতিক পরামর্শ সভার সভাপতিত্ব করেন- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (পশ্চিম ইউরোপ এবং ইইউ) আবুল হাসান মৃধা এবং ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া, ওশেনিয়া, লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান বিষয়ক মহাপরিচালক রাষ্ট্রদূত থমাস লুন্ড-সোরেনসেন।
ডেনমার্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ কে এম শহীদুল করিম এবং বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলারও তাদের নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সভায় উভয়পক্ষ পারস্পরিক শ্রদ্ধা, অভিন্ন মূল্যবোধ এবং অভিন্ন আকাঙ্ক্ষার ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের মধ্যে স্থায়ী ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পুনর্ব্যক্ত করে। তারা ২০২৩ সালের মে মাসে দ্বিতীয় দফার পরামর্শের পর থেকে অগ্রগতি পর্যালোচনা করে এবং ভবিষ্যতে আরও গভীরভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য নতুন পথ অনুসন্ধান করে।দুটি প্রতিনিধিদল রাজনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, উন্নয়ন সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তন, সবুজ ও ন্যায্য রূপান্তর, সমুদ্র বিষয়ক, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষা, প্রযুক্তি, জনগণের সাথে জনগণের যোগাযোগ এবং পারস্পরিক স্বার্থের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়গুলোর ওপর ফলপ্রসূ এবং বিস্তৃত আলোচনা করে।
সভায় শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক এবং ন্যায়সঙ্গত বাংলাদেশের দিকে উত্তরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন করার জন্য ডেনমার্ক তার অব্যাহত প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। ডেনিশ পক্ষ জলবায়ু কর্মসূচী এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেছে এবং দ্বিপাক্ষিক সবুজ কৌশলগত অংশীদারিত্ব কাঠামোর অধীনে অব্যাহত সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছে।
বাংলাদেশ ডেনমার্কের দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে, বিশেষ করে সুশাসন, কৃষি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সমুদ্র খাতে। উভয়পক্ষ জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা, নীল অর্থনীতি এবং সবুজ প্রযুক্তির মতো ক্ষেত্রে সম্প্রসারিত সহযোগিতার সুযোগ অন্বেষণে সম্মত হয়েছে।
উভয়পক্ষ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে, যার মধ্যে রয়েছে বাজার প্রবেশে সহজতর এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রচারের লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ। তারা বাণিজ্য সম্ভাবনা উন্মোচন এবং বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করার জন্য একটি যৌথ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কমিটি প্রতিষ্ঠা করতে সম্মত হয়েছে। ২০২৯ সালের পরেও ইইউর জিএসপি প্লাস সুবিধা থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য বাংলাদেশ ডেনমার্কের সমর্থন চেয়েছে।
সভায় পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি এবং জনগণ-মানুষের সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে উভয়পক্ষ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে একাডেমিক সহযোগিতা, বৃত্তি এবং সাংস্কৃতিক কর্মসূচি।
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য ডেনমার্ক তাদের অব্যাহত মানবিক সহায়তা পুনর্ব্যক্ত করেছে। উভয়পক্ষ তাদের নিজ নিজ অঞ্চলে সাম্প্রতিক উন্নয়নের বিষয়ে মতবিনিময় করেছে এবং শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং আঞ্চলিক সংহতির প্রতি তাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: