শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


বিদায় এক কিংবদন্তির

ফেদেরার কাঁদলেন, কাঁদালেন ভক্তদের


প্রকাশিত:
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৩:৫০

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ১৯:৫২

 ছবি : সংগৃহীত

চিরন্তন সত্যি জেনেও কখনও কখনও কথাটা মানতে কষ্ট হয় যে জাগতিক নিয়মে সবকিছুরই শেষ আছে। রজার ফেদেরার। তিনি যে টেনিস ছেড়ে দিচ্ছেন, সেই ঘোষণা এক সপ্তাহ আগেই দিয়েছিলেন। লেভার কাপে শেষচিহ্ন এঁকে নেওয়ার সব আয়োজনও ছিল প্রস্তুত। তারপরও এই বাস্তবতা মানতে কষ্ট হয়- ফেদেরারের।

জাদুমাখানো ব্যাকহ্যান্ড আর দেখতে পাওয়া যাবে না। যাকে ভালোবেসে, হৃদয়ে ধারণ করে জীবনের এতটা পথ পাড়ি দেওয়া, সেই টেনিস কোর্টে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ খেলা হবে না। চোখের জল আর ধরে রাখতে পারলেন না রজার। আর প্রিয় খেলোয়াড়ের চোখ গড়ানো জল দেখে তাদের সতীর্থ থেকে শুরু করে ভক্তদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছিল লন্ডনের আকাশ।

৪১ বছর বয়সী ফেদেরারকে আর পাওয়া যাবে না টেনিস কোর্টে। প্রদর্শনী ম্যাচে হয়তো পাওয়া যাবে, কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁঝ আর থাকবে না তার টেনিসে। জীবনের শেষ ম্যাচে জুটি বেঁধেছিলেন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদালের সঙ্গে। যদিও শেষটা হার দিয়ে হয়েছে। ২৫ বছরের বর্ণিল ক্যারিয়ারে ফেদেরার মানেই তো ছিল সুন্দর টেনিসের প্রদর্শনী, মুগ্ধতার বৃষ্টিতে অবিরাম ভিজে যাওয়া।

লেভার কাপ দিয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন। কতটা কষ্ট হয়েছে সিদ্ধান্ত নিতে, সেটিও জানিয়েছিলেন ফেডএক্স। কিন্তু সেই ঘোষণা ছিল এক ভিডিও বার্তায়, যেটির সঙ্গে আসলে গ্যালারি ভর্তি দর্শকের সামনে থেকে বিদায় নেওয়ার কোনও তুলনা চলে না। আর তিনি যেভাবে বিদায় নিলেন, সেটা তাকেই মানায়। ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় যাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, টেনিস বিশ্বে যাদের ডাকা হয় ‘বিগ ফোর’ বলে; ফেদেরারের বিদায়ে একমঞ্চে দেখা মিললো সবার। সুইস তারকা তো বটেই, ছিলেন নাদাল, নোভাক জোকোভিচ ও অ্যান্ডি মারে।

এর মধ্যে নাদালের সঙ্গে জুটি বেঁধে খেলেছেন ২০টি গ্র্যান্ড স্লামজয়ী ফেদেরার। যদিও লন্ডনের ও-টু অ্যারেনায় টিম ওয়ার্ল্ড-এর জুটি জ্যাক সক ও ফ্রান্সেস টিয়াফোর কাছে ৪-৬, ৭-৬ (৭-২), ১১-৯ সেটে হেরে গেছেন তারা। ম্যাচ হার নিয়ে কে ভাববে, ফেদেরারের শেষটা হয়ে গেলো, সেটিই গ্রাস করলো সবাইকে! ফেদেরার তার সঙ্গী নাদালকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন। নাদালও নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না, তারও চোখ গড়িয়ে নেমে আসে জলধারা। শুধু তারা নন, কোর্টের ভেতর থেকে গ্যালারিতে বসে থাকা অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯৯৮ সালে পেশাদার টেনিসে পা রাখেন ফেদেরার। সময়ের পরিক্রমায় নিজেকে এতটা উঁচু নিয়ে গিয়েছেন যে, অনেকটা সময় ধরে তিনিই ছিলেন সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্লাম জয়ী। শুধু শিরোপা দিয়ে আসলে ফেদেরারকে মাপা যাবে না। তার সাবলীল সব শট ও মুগ্ধতা ছড়ানো পারফরম্যান্স অনেকের কাছে টেনিস ইতিহাসের সেরা। তার মতো টেনিস খেলোয়াড় কখনও আসবে কিনা, সেটা নিয়েও অনেকে সন্দিহান।

টেনিসকে নতুন রূপ দেওয়া, টেনিসকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তোলা এই কিংবদন্তির শেষটা হলো নাদাল-জোকোভিচের কাঁধে চড়ে। টেনিসের এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। ফেদেরারের এমন বিদায়ই তো প্রাপ্য। 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top