বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১


ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও কারণ


প্রকাশিত:
৩০ জুলাই ২০২২ ২৩:২৯

আপডেট:
২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৫৪

 ছবি : সংগৃহীত

জলবায়ু সংবেদনশীল হবার কারণে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের অন্যতম রোগ ডেঙ্গু। এই রোগ সারা বিশ্বে জনস্বাস্থ্যের জন্য শীর্ষ ১০টি হুমকির অন্যতম। প্রতিবছর শতাধিক দেশে আনুমানিক ৩৯০ মিলিয়ন মানুষ সংক্রমিত হয়।

প্রথমে ডেঙ্গু ভাইরাস ছিল বানরের মধ্যে,পরবর্তীতে ৮০০ বছর আগে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। ভাইরাসটি প্রথমে আফ্রিকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। মধ্য বিশ শতক পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সীমাবদ্ধ ছিল। বাহক এডিস এজিপ্টাই মশার মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে অধিকসংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হতে শুরু করে।

১৬৮৫ সালে ডেঙ্গু রোগী প্রথম শনাক্ত হয় ব্রাজিলের রেসিফ নগরে। এর সাত বছর পর মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদরে ডেঙ্গু মহামারিতে মারা যায় দুই হাজার মানুষ। ১৯৪৩ সালে এই ভাইরাস আবিষ্কার করেন জাপানের রেন কিমুরা ও সুসুমা হটটা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ডে গুরুতর ডেঙ্গু মহামারি প্রথম দেখা দেয় ১৯৫০ সালে।

ডেঙ্গুর কারণঃ ডেঙ্গু হলো ভাইরাল সংক্রমণ, সংক্রমিত মশার কামড়ে মানুষের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমিত হয়। প্রধান বাহক হলো এডিস এজিপ্টাই মশা। কিছু ক্ষেত্রে এডিস এলবোপিকটাসও এই রোগ ছড়ানোর জন্য দায়ী। আরএনএ ভাইরাস ডেঙ্গু, ভাইরাস ডেনভি এর চার সেরোটাইপ। ট্রপিকাল ও সাব-ট্রপিকাল জলবায়ুর দেশের নগর ও শহরতলিতে গুরুতর ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি দেখা যায়। বর্ষার সময় শহরাঞ্চলে প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা দেয়। এই মশা বেশি কামড়ায় দিনে, বিশেষ করে ভোরে ও সন্ধ্যায়।

লক্ষণঃ
♦ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মৃদু। শিশু ও বয়স্কদের জন্য গুরুতর হতে পারে।

♦ উপসর্গ থাকে দুই থেকে সাত দিন।

♦ সংক্রমিত মশার কামড়ের পর চার থেকে ১০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর উপসর্গ দেখা দেয়।

♦খুব জ্বর ও প্রচণ্ড পেট ব্যথা।

♦ অবিরাম বমি।

♦ দ্রুত শ্বাস।

♦ নাক বা মাড়ি দিয়ে রক্তক্ষরণ।

♦ অবসন্নতা।

♦ অস্থিরতা।

♦ লিভার বড় হয়ে যাওয়া।

♦ বমি আর মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

সঠিক চিকিৎসা না থাকায় সাবধানতা অবলম্বন ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখা জরুরি। ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু হলো ব্রেক বোন ফিভার বা হাড়ভাঙা জ্বর। হেমোরেজিক ডেঙ্গুর কারণে হয় রক্তক্ষরণ। এ ধরনের রোগীর প্লাটিলেট কমে যায়, তাই দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। ডেঙ্গু শক সিনড্রোম খুব মারাত্মক, এতে মৃত্যুও হতে পারে। ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে দেখা দেয় পানিশূন্যতা, পালস বেড়ে যায়, রক্তচাপ কমে, শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আসে, শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয়, রোগীর মধ্যে অস্থিরতা দেখা দেয়। রোগ নির্ণয়ের জন্য জ্বর আসার চার-পাঁচ দিন পর এনএস-১ পরীক্ষা করতে হবে। পরবর্তী সময়ে আইজি এম ম্যাক এলাইজা পরীক্ষা করতে হবে। প্লাটিলেটের সংখ্যা এক লাখের নিচে হলে সতর্ক হতে হবে।

শিশুদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর লক্ষণ- ঘুম নেই, অস্থির, বিরক্ত করছে, দুর্বল র‌্যাশ, মাড়ি ও নাক দিয়ে রক্ত ঝরা, ত্বক কালশিটে হয়ে যাওয়া, ২৪ ঘণ্টায় তিনবার বমি, মুখ, জিহ্বা, ঠোঁট শুকনা, প্রস্রাব কমে যাওয়া, চোখ গর্ত, কাঁদলে চোখে জল নেই, ঠাণ্ডা শরীর—এমন কিছু লক্ষ করলে সতর্ক হতে হবে। অবিলম্বে ডাক্তার দেখাতে হবে।

ডেঙ্গু হলে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। কমে যায় প্লাটিলেট। প্রচুর পানি ও তরল খাবার খেতে হবে। ডাবের পানি, ফলের রস, দরকার হলে ওরস্যালাইন পান করতে হবে। পেঁপে পাতার রস, নিমপাতা, বেদানা, দই, ব্রকোলি, পরিজ, আদা চা, লেবু, কমলা, টমেটো, জাম, পেঁপে ইত্যাদি দেওয়া যায়। তেলে ভাজা খাবার, প্রক্রিয়াজাত করা খাবার, ঝাল মসলায় রান্না খাবার, চা-কফি এড়িয়ে চলতে হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top