বৃহঃস্পতিবার, ২৭শে নভেম্বর ২০২৫, ১৩ই অগ্রহায়ণ ১৪৩২


বিচারকের পর্যবেক্ষণ

‘শেখ হাসিনা অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত, তিনি প্রতারণা করেছেন’


প্রকাশিত:
২৭ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:২০

আপডেট:
২৭ নভেম্বর ২০২৫ ২১:০০

ফাইল ছবি

শেখ হাসিনা অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত, তিনি প্রতারণা করেছেন। তিনি এটা (পূর্বাচলের প্লট) না পেলে কোনো সৎ লোক হয়তো পেতেন।’

ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার ৩ মামলায় বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণার আগে পর্যবেক্ষণে একথা বলেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন।

রায়ে ৩ মামলায় শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া এক মামলায় তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদকে (জয়) পাঁচ বছর, আরেক মামলায় মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরও ১৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকারকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

রায় ঘোষণার আগে পর্যবেক্ষণে বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর একটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬টি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। এরপর দুদক টিম গঠন করে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত দুর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানের রিপোর্টের ভিত্তিতে গত ১২ জানুয়ারি মামলা দায়েরের অনুমতি দেয় দুদক। এরপর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের নির্দেশে বিধি লঙ্ঘন করে রাজউক

পর্যবেক্ষণে তিনি বলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিধি অনুসারে প্লট বরাদ্দ চেয়ে প্রার্থীর আবেদন ব্যতীত কর্তৃপক্ষ কোনো বরাদ্দ প্রদান করে না। বিধি ৫ অনুসারে প্রেসক্রাইবড ফরম ব্যতীত আবেদন করা যাবে না। শেখ হাসিনার কোনো আবেদন না থাকা সত্ত্বেও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের নির্দেশে বিধি লঙ্ঘন করে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার অনুকূলে রাজউকের প্লট বরাদ্দের জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে নোট ইনিশিয়েট করা হয়। ওই নোটে স্বাক্ষর করেন পূরবী গোলদার, সাইফুল ইসলাম সরকার, কাজী ওয়াছি উদ্দিন, শহীদ উল্লা খন্দকার এবং শরীফ আহমেদ।

পরদিন ১৯ জুলাই শেখ হাসিনার জন্য প্লট বরাদ্দের অনুরোধ জানিয়ে পূরবী গোলদার স্বাক্ষরিত একটি চিঠি রাজউকের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়। ২৭ জুলাই রাজউকের বোর্ড সভায় আনিছুর রহমান, শফিউল হক, খুরশীদ আলম, নাসির উদ্দীন এবং সামসুদ্দীন ওই সভায় রেজ্যুলেশন গ্রহণ করে শেখ হাসিনাকে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার সুপারিশ করেন। প্রেসক্রাইবড ফরমে শেখ হাসিনার কোনো আবেদন না থাকা সত্ত্বেও বিধি ৫ ও বিধি 13A(2)(ii) লঙ্ঘন করে শেখ হাসিনাকে প্লট দেওয়ার সুপারিশ করা হয়

অকার্যকর হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেন শেখ হাসিনা

পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়, ২৭ জুলাই রাজউকের উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ স্বাক্ষরিত চিঠিতে পূর্বাচল নতুন শহর আবাসিক প্রকল্পে বিধি 13(A)(1)(a) অনুসারে ১০ কাঠার প্লট পাওয়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন বলে শেখ হাসিনাকে জানানো হয়। ওই চিঠিতে নোটারি পাবলিকের প্রত্যয়ন করা হলফনামাসহ অন্যান্য কাগজপত্রে ৩১ অগাস্টের মধ্যে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়। ৩০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে সম্পাদিত নোটারি পাবলিক কর্তৃক প্রত্যায়িত হলফনামায় উল্লেখ করতে হবে যে রাজউকের অধিক্ষেত্রে আবেদনকারীর নিজ নামে বা তার স্বামী/স্ত্রী/পরিবার/পোষ্যদের নামে ইতোপূর্বে রাজউক থেকে বা অন্য কোনো সরকারি/আধা সরকারি সংস্থা থেকে ইতোপূর্বে প্লট বরাদ্দ করা হয়নি। শেখ হাসিনা রাজউকে হলফনামা দাখিল করেন। কিন্তু হলফনামাটি নোটারি পাবলিক বা প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে শপথ করা ছিল না। এতে তিনি কেবল নিজ নামে কোনো প্লট বরাদ্দ না পাওয়ার কথা উল্লেখ করলেও তার স্বামী এম ওয়াজেদ আলীর নামে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের লিজ ডিড মূলে ১৯৭৩ সালে সরকারি জমি বরাদ্দের বিষয়ে কিছুই উল্লেখ করেননি। নোটারি পাবলিক প্রত্যায়িত না হওয়ায় হলফনামাটি আইনগতভাবে অকার্যকর ছিল, রাজউকের তা (হলফনামা) বিবেচনা করার কোনো সুযোগ ছিল না। তবুও অবৈধ ও অকার্যকর সেই হলফনামাকে ভিত্তি করে আসামিদের যোগসাজশে প্লটের অস্থায়ী বরাদ্দপত্র জারি করা হয়।

সেই বরাদ্দপত্র অনুযায়ী প্লটের মূল্য নির্ধারিত হয় কাঠা প্রতি তিন লাখ টাকা। ১০ কাঠা জমির মূল্য ৩০ লাখ টাকা। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রথম কিস্তি ১২ লাখ টাকা জমা দিতে বলা হয়। শেখ হাসিনা ৩ অগাস্ট সোনালী ব্যাংকের গণভবন শাখা থেকে রাজউকের অনুকূলে ১২ লাখ টাকার পে-অর্ডার জমা দেওয়া হয়। ওইদিনই রাজউকের ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর রোডের ০৯ নম্বর প্লট শেখ হাসিনার অনুকূলে চূড়ান্ত বরাদ্দপত্র জারি করা হয়। প্লটের নির্ধারিত মূল্য পরিশোধের পর প্লট হস্তান্তরের জন্য সুপারিশ করা হলে শেখ হাসিনা নিজ স্বাক্ষরে ২০২২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর প্লট হস্তান্তরের আবেদন করেন। যা এই মামলার মিনস রিয়া হিসেবে গণ্য হয় বলে পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন বিচারক।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নিজ স্বাক্ষরে ১২ সেপ্টেম্বর লিজ দলিল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেন এবং ৩০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে আরেকটি অশপথিত হলফনামা দেন, যেখানে নিজ নামে কোনো প্লট না থাকার কথা উল্লেখ থাকলেও স্বামী বা পরিবারের নামে বরাদ্দ করা জমির তথ্য গোপন রাখা হয়। এ হলফনামাটিও আইনগতভাবে অকার্যকর ছিল। তথাপি রাজউক লিজ দলিল সম্পাদনের সিদ্ধান্ত নেয়। ওইদিন রাজউক এবং শেখ হাসিনার মধ্যে প্লটের চুক্তি কালীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নিবন্ধিত হয়।

চারবারের প্রধানমন্ত্রী হয়েও লোভ ছিল শেখ হাসিনার

বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ফাইনালি প্লট বুঝিয়ে দিতে দরখাস্ত দিলেন শেখ হাসিনা। সম্পদের প্রতি তার লোভ আছে। না হলে আবেদনটি ছুঁড়ে ফেলতে পারতেন। বলতেন প্লট দরকার নাই। তা না করে প্লট বুঝে নিতে আবেদন করেন। পরে ৯ প্লটটি চূড়ান্তভাবে তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এখানে রাজউক এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় অন্যায় করেছে। শেখ হাসিনা অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত, প্রতারণা করেছেন। তিনি এটা না পেলে কোনো সৎ লোক হয়তো পেতেন।

তিনি বলেন, তিনি ৩ আগস্ট প্লট পান। দুঃখজনক ৩১ আগাস্ট তিনি ছেলে জয়ের জন্যও প্লটের রিকমেন্ড করলেন। তিনি একজন পলিটিক্যাল লিডার, চারবারের প্রধানমন্ত্রী। তার কেন এতো টাকা, এতো সম্পদ লাগবে? তারা এসব সম্পদ না পেলে তো অন্য কেউ পেতেন। এরপর ১১ সেপ্টেম্বর তিনি তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের জন্য প্লটের রিকমেন্ড করে চিঠি দিলেন। তিনিও (পুতুল) প্লট পেলেন। ছেলে-মেয়ের পর তিনি বোন, বোনের ছেলে-মেয়ের জন্য প্লটের জন্য রিকমেন্ড করলেন। গোষ্ঠী, এরিয়া, ডিসট্রিক সবার জন্য রিকমেন্ড করা হয়েছে। মামলার বিষয়বস্তু না হওয়ায় এগুলো আর বললাম না।

পরে একে একে তিন মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক। রায় পড়া শেষ করে বেলা ১১টা ৫৬ মিনিটের দিকে এজলাস থেকে নেমে যান তিনি।

কার কত বছরের সাজা

শেখ হাসিনা : ৩ মামলায় ৭ বছর করে মোট ২১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড।

সজীব ওয়াজেদ জয় : এক মামলায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড।

সায়মা ওয়াজেদ পুতুল : এক মামলায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড।

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন : ২ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। এক লাখ টাকা করে মোট ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৬ মাস করে এক বছরের কারাদণ্ড।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ : ৩ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার : ৩ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন : ৩ মামলায় ৬ বছর করে মোট ১৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। এক লাখ টাকা করে মোট ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে দেড় বছরের কারাদণ্ড।

সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার : ৩ মামলায় ১ বছর করে মোট ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। পাঁচ, দশ ও পাঁচ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাস করে ৩ মাসের কারাদণ্ড।

রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা : ৩ মামলায় ৫ বছর করে মোট ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। পঞ্চাশ হাজার টাকা করে মোট দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৩ মাস করে ৯ মাসের কারাদণ্ড।

রাজউকের সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন : ৩ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। ২০ হাজার টাকা করে মোট ষাট হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৬ মাসের কারাদণ্ড।

মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.) : ৩ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৯ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। ২০ হাজার টাকা করে মোট ষাট হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৬ মাসের কারাদণ্ড।

রাজউকের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ : এক মামলায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাস কারাদণ্ড।

রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস : ২ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৪ মাসের কারাদণ্ড।

রাজউকের সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম : ২ মামলায় ৩ বছর করে মোট ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ২ মাস করে ৪ মাসের কারাদণ্ড।

রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) মো. শফিউল হক : এক মামলায় ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ২ মাসের কারাদণ্ড।

রাজউকের পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম : এক মামলায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাস কারাদণ্ড।

রাজউকের পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) মো. কামরুল ইসলাম : এক মামলায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাস কারাদণ্ড।

রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মো. হাফিজুর রহমান : এক মামলায় ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড।

রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মো. হাবিবুর রহমান সবুজ : এক মামলায় ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড।

রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) নায়েব আলী শরীফ : ২ মামলায় ১ বছর করে মোট ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। ৫ হাজার টাকা করে মোট ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাস করে ২ মাসের কারাদণ্ড।

রাজউকের সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মাজহারুল ইসলাম : এক মামলায় ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড।

রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম : ৩ মামলায় ১ বছর করে মোট ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। ৫ হাজার টাকা করে মোট ১৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাস করে ৩ মাসের কারাদণ্ড।

সব অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি দুদক : হাসিনাসহ আসামিরা খালাস পেলেন যে ধারায়

দুদকের করা এসব মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি সংস্থাটি। আদালতের রায়ে শেখ হাসিনাকে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায়ও তিনি অপরাধ করেছেন বলে প্রমাণ হয়েছে। বাকি আসামিদের শুধু দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অপরাধের ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

এদিকে দুদকের করা মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১৬১/১৬৩/২০১ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে এসব অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন। এছাড়া বাকি আসামিদেরও দণ্ডবিধির পৃথক ধারার অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

রায় ঘোষণার পর দুদক প্রসিকিউটর মইনুল হাসান প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, শেখ হাসিনাকে পৃথক তিন মামলায় ৭ বছর করে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আমরা এ রায়ে খুশি নই। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম প্রত্যেক মামলায় শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। দুদকের সঙ্গে কথা বলে আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাব কী না সিদ্ধান্ত নেব। দোষী প্রমাণিত হলেও সর্বোচ্চ সাজা না হওয়ায় আমরা এ রায়ে অখুশি হয়েছি।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top