মঙ্গলবার, ১৪ই অক্টোবর ২০২৫, ২৮শে আশ্বিন ১৪৩২


ডাবের পানি নাকি ওআরএস, পানিশূন্যতা কমাতে কোনটি বেশি উপকারী


প্রকাশিত:
১৩ অক্টোবর ২০২৫ ১০:৩০

আপডেট:
১৪ অক্টোবর ২০২৫ ০৪:০৯

ফাইল ছবি

ভরা শরৎকালেও বৃষ্টি কমছে না, যার ফলে ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দিকাশি এবং পেট খারাপের সমস্যা বাড়ছে। আবার যখন রোদ ওঠে, তখন তা থাকে খুবই চড়া। পেট খারাপ হোক বা অতিরিক্ত রোদ—যেকোনো সময়ই জলশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন) দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত পরিশ্রম বা শরীরচর্চার পর ঠিকমতো পানি না খেলেও শরীরের পানির অভাব হয়। শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে মানুষ শুধু দুর্বলই হয় না, কখনও কখনও এটি প্রাণঘাতীও হতে পারে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিলে নষ্ট হয় ইলক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য। শুধু পানি নয়, শরীর থেকে বেরিয়ে যায় জরুরি কিছু খনিজও। সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি খনিজ পদার্থগুলোর ভারসাম্য বজায় রাখা সুস্থ থাকার পক্ষে খুবই জরুরি। এর ফলেই মাথা ধরা, ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা যায়। শারীরবৃত্তীয় নানা কার্যকলাপও থমকে যেতে পারে শরীরে এই খনিজগুলোর অভাব হলে।

পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, ডাবের পানি হল প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইট পানীয়। এতে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং সোডিয়াম রয়েছে। ডাবের পানি শরীরের জন্য অবশ্যই উপকারী। অল্প একটু পানিশূন্যতা হলে, ডাবের পানি ভালো। যেমন রোদে অনেক ক্ষণ হাঁটাহাঁটি, শরীরচর্চায় প্রচুর ঘাম হলে বা টানা না খাওয়ার ফলে শরীরে পানি এবং খনিজের অভাব হলে ডাব অত্যন্ত উপযোগী। এতে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা দ্রুত শরীরে শক্তির জোগান দেয়। ডাবের পানিতে মেলে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে শরীরকে সুরক্ষা দেয়।

তবে পানিশূন্যতার আরও কারণ থাকতে পারে। ক্রমাগত বমি, আন্ত্রিকের ফলে শরীরে থেকে দ্রুত প্রবল পরিমাণে পানি এবং খনিজ বেরিয়ে যেতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য দরকার হয় ওআরএস (ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন)। আন্ত্রিক বা বমি হলে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ, জল বেরিয়ে যেতে থাকে। তখন শরীরে প্রয়োজনীয় জল ও খনিজ লবণের ভারসাম্য বজায় রাখতে রোগীকে ওআরএস খাওয়ানো হয়। এটি বিশেষভাবে তৈরি। যাতে দ্রুত শরীরে শর্করা, ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা হয়। এতে পটাশিয়াম, সোডিয়াম নির্দিষ্ট মাত্রায় মেশানো থাকে। প্রচণ্ড গরমে রোদে দীর্ঘ ক্ষণ ঘোরাঘুরি বা শরীরচর্চার পরেও এটি খাওয়া যায়। তবে মাপ জানা জরুরি।

ডাবের পানি ও ওআরএস কতটা খাওয়া দরকার

শরীরে যাতে পানির ঘাটতি না হয়, সেজন্য দিনে এক গ্লাস ডাবের জল খাওয়া যেতে পারে। উপবাসের দিনে বা বাইরে ঘোরাঘুরি হলে দুই গ্লাস খাওয়া যায়। তবে এক সঙ্গে দুই গ্লাস না খাওয়াই ভালো।

আন্ত্রিক, বমি হলে দিনে প্রয়োজন মতো ২০০-৪০০ মিলিলিটার ওআরএস খাওয়া যেতে পারে। তবে তা একবারে নয়। বমি বা মলত্যাগের পর শরীর ঝিমিয়ে যেতে শুরু করলে অল্প অল্প করে ওআরএস খেতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে চামচে করে তা খাওয়ানো যেতে পারে।

পুষ্টিবিদেরা বলেছেন, ডাবের পানি শরীর ভালো রাখতে এমনিও খাওয়া যায়। পানিশূন্যতা অল্প হলে ডাবের পানিই সমাধান হতে পারে। বিশেষত, উপোসের পর ডাবের পানি খাওয়া ভালো। তবে সমস্যা গুরুতর হলে, পানি বেশি মাত্রায় বেরিয়ে যেতে শুরু করলে ওআরএস-ই ভরসা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top