ইজতেমার চাপ সড়কে, সামাল দিতে গাড়ি ঘুরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ
প্রকাশিত:
১৩ জানুয়ারী ২০২৩ ০১:৪১
আপডেট:
১১ মে ২০২৫ ০৫:১৮

দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হচ্ছে শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি), চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্ব ২০-২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। তবে ইজতেমা শুরুর আগেই এর প্রভাব পড়েছে সড়কে। বিমানবন্দর-উত্তরা হয়ে গাজীপুরগামী সড়কে যানবাহনের চাপে তীব্র যানজট বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই। দুপুর থেকে চাপ কমাতে আন্তঃজেলা যানবাহনগুলো মহাখালী থেকে ঘুরিয়ে দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ।
ইজতেমার প্রভাব ও গাজীপুর সড়কের এক লেন সচল থাকার কারণে শুধু উত্তরা, টঙ্গী সড়ক নয়, রাজধানীর মহাখালী, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, মতিঝিল, গুলশান, মিরপুরের একাংশসহ তেজগাঁও এলাকার সড়কে যানবাহনের বাড়তি চাপ দেখা গেছে। এ অবস্থায় চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের। তীব্র যানজটের কারণে সকালে থেকেই সড়কে বের হওয়া সাধারণ মানুষ পড়েছেন বিপাকে। তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় পার করতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল থেকেই বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় যানজট দেখা দেয়। যার প্রভাব ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে পুরো রাজধানীতে।
দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও ও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, সব লেনেই অতিরিক্ত গাড়ির চাপ। দুই লেনে একসঙ্গে ডাইভারশন করে মাঝে দাঁড়িয়ে শৃঙ্খলভাবে যান চলাচল অব্যাহত রাখতে চেষ্টা করছেন ট্রাফিক সদস্যরা। তবুও সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। বিজয় সরণিতে দেখা যায়, অতিরিক্ত সময় লাগছে একেক লেনের গাড়ি ছাড়তে।
এদিকে রাজধানীর কমলাপুর থেকে নয়াপল্টন, মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে প্রেস ক্লাব, গুলিস্তান গোলাপশাহ মাজার থেকে রায়সাহেব বাজার এবং রাষ্ট্রপতি ভবনের আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট দেখা গেছে। বিকল্প পথ হিসেবে ছোট রাস্তাগুলো ব্যবহার করায় সেগুলোতেও যানজট দেখা যাচ্ছে।
বাদ যায়নি পুরান ঢাকার সড়কও। পুরান ঢাকার ইংলিশ রোড মোড়, বংশাল চৌরাস্তা, গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট, গোলাপশাহ মাজার থেকে পুরানা পল্টন মোড় পর্যন্ত প্রতিটি সিগনালে অতিরিক্ত সময় লাগছে। এসব এলাকায় থেমে থেমে যানবাহন চলাচল করছে। প্রতিটি সিগনালে ১০ থেকে ২০ মিনিট বসে থাকতে হচ্ছে।
বিমানবন্দর এলাকার ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সকালে কার্যত স্থবির হয়ে পড়া সড়ক সচল হয়েছে। তবে চাপ রয়ে গেছে যানবাহনের। বাদ নেই অলিগলিও
রেজওয়ান নামে রামপুরার বাসিন্দা মুঠোফোনে জানান, আজকের চিত্র একদম ভিন্ন। বাসা থেকে বের হয়েছিলাম মতিঝিল যাব ভেবে। কিন্তু বাসার নিচ পর্যন্ত রিকশার চাপ। পাঁচ মিনিটের পথ আধা ঘণ্টায় পেরিয়ে পৌঁছেছি রামপুরার মূল সড়কে। তবে সড়কের পরিস্থিতি বুঝে বাসায় ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি বলেন, এলাকায় যান চলাচল স্থবির হয়ে রয়েছে। বিশেষ করে বিমানবন্দর থেকে উত্তরাগামী রাস্তায় যান চলাচল একদম বন্ধ। এর ফলে বিমানবন্দর হয়ে এই যানজটে একদিকে পৌঁছেছে মহাখালী ফ্লাইওভার পর্যন্ত আর অন্যদিকে পৌঁছেছে প্রগতি সরণি পর্যন্ত।
উত্তরার জসিমউদদীন এলাকার বাসিন্দা ইমরান হাসান জানান, অনেক দিন ধরেই উত্তরাবাসী ভুগছে যানজট বিড়ম্বনায়। আজ বের হয়ে টের পেয়েছি ভুগবে পুরো রাজধানীবাসী। দুই ঘণ্টায় মহাখালী পৌঁছেছি। অফিসগামী মানুষের দশা আরও বেহাল।
ট্রাফিক উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কামরুজ্জামান বলেন, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে দেশ ও বিদেশে থেকে হাজার হাজার মুসল্লি তুরাগ নদীর পাড়ে এসে হাজির হচ্ছেন। এর কারণে মূলত সড়কে চাপ বেড়েছে। গাজীপুরে সড়কে এক লেনে চলছে দুই লেনের গাড়ি। ফলে বিমানবন্দর এলাকা থেকে উত্তরার দিকে বা গাজীপুরের দিকে যানবাহন চলাচলে বাড়তি সময় লাগছে।
তিনি বলেন, এখন সড়কের পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। সকালের মতো যানজট না থাকলেও যানবাহনের চাপ আছে। বিকেল থেকে যেন ফের যানজট পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেজন্য আমরা মহাখালীতেই আন্তঃজেলায় চলাচল করা ছোট বড় সব বাস ঘুরিয়ে দিচ্ছি। সেগুলো কিছু মিরপুর হয়ে কিছু মহাখালী থেকেই শ্যামলী-কল্যাণপুর পাঠানো হচ্ছে।
যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) নাবিদ কামাল শৈবাল বলেন, ইজতেমায় আসা মুসল্লি ও তাদের বহনকারী পরিবহন সড়কে চাপ তৈরি করেছে। ট্রাফিকের অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য সড়কে কাজ করছে। এই চাপ ইজতেমা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। সেজন্য এই সড়কে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া চলাচল না করার অনুরোধ জানান তিনি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: