আপনার সন্তানও ভুগতে পারে মানসিক চাপে, বুঝবেন যেভাবে
প্রকাশিত:
১২ অক্টোবর ২০২৫ ১০:০৯
আপডেট:
১৪ অক্টোবর ২০২৫ ০৪:০২

সন্তানের আচরণে হঠাৎ পরিবর্তন এসেছে। সে আগের মতো প্রাণবন্ত নেই, অথবা অতিরিক্ত রাগ বা কান্নাকাটি করছে? খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাসে হঠাৎ পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন? এমন হলে মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে– আপনার সন্তান কি আদৌ মানসিক চাপে ভুগছে?
মানসিক চাপের প্রসঙ্গ এলেই আমরা সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের কথা ভাবি। কিন্তু বর্তমান আধুনিক ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশে শিশুরাও বিভিন্নভাবে মানসিক চাপে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুর মনের উপর চাপ তৈরি হওয়ার পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ, যা প্রায়ই আমরা অবহেলা করে থাকি।
যেসব কারণে শিশুরা মানসিক চাপে ভোগে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুর মানসিক চাপের পেছনে যেসব কারণ কাজ করে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো–
১. অতিরিক্ত ডিভাইস নির্ভরতা: স্মার্টফোন ও অন্যান্য পর্দাভিত্তিক যন্ত্রের অতিরিক্ত ব্যবহারে শিশুদের মধ্যে মনঃসংযোগের সমস্যা, অবসাদ ও উদ্বেগ তৈরি হতে পারে।
২. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব: অতিরিক্ত অনলাইন উপস্থিতি শিশুদের মনে নানা ধরনের মানসিক চাপ তৈরি করে, বিশেষ করে তুলনামূলক মনোভাব বা অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্যের কারণও হতে পারে।
৩. অতিরিক্ত পড়াশোনার চাপ: পরীক্ষার ফল, স্কুলে ভালো রেজাল্ট করার চাপ অনেক সময় শিশুদের দমবন্ধ করে তোলে। বাবা-মায়ের প্রত্যাশা যদি মাত্রাতিরিক্ত হয়, তবে সেটি মানসিক অস্থিরতার কারণ হতে পারে।
৪. প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব: ‘সব কিছুতেই প্রথম হতে হবে’–এই মানসিকতা শিশুকে শুধু শারীরিক নয়, মানসিকভাবেও ক্লান্ত করে তোলে।
৫. পারিবারিক অশান্তি: বাবা-মায়ের সম্পর্কের টানাপোড়েন বা পারিবারিক সমস্যা শিশুর মনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে, যা সে বোঝাতে না পারলেও ভেতরে ভেতরে চাপ তৈরি করে।
৬. বয়ঃসন্ধিকালীন সমস্যা: বিশেষ করে বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা সংক্রান্ত প্রত্যাখ্যানের অভিজ্ঞতা শিশু বা কিশোরদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে।
কীভাবে বুঝবেন আপনার সন্তান মানসিক চাপে ভুগছে?
শিশুরা সরাসরি মানসিক চাপের কথা বলতে না পারলেও তাদের আচরণে কিছু লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে ওঠে–
-> অতিরিক্ত জেদ বা রাগ
-> অল্পতেই কান্নাকাটি করা
-> খাওয়া-দাওয়ার প্রতি অনাগ্রহ বা হঠাৎ অভ্যাসগত পরিবর্তন
-> কারও সঙ্গে কথা বলতে বা খেলতে না চাওয়া
-> নিজের মতো করে থাকা বা অতিরিক্ত নিঃসঙ্গতা
সন্তানের শারীরিক সুস্থতার মতো মানসিক সুস্থতাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই সময়মতো সতর্ক না হলে ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় পড়তে হতে পারে। শিশুর আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে দ্বিধাবোধ করবেন না।
তাই সন্তানের সঙ্গে কথা বলুন, তাকে বোঝার চেষ্টা করুন। একজন ভালো শ্রোতা হন। মনে রাখুন– শিশুদের শরীরের যেমন যত্নের প্রয়োজন, তেমনি তার মনের যত্নও নিতে হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: