রবিবার, ১১ই মে ২০২৫, ২৭শে বৈশাখ ১৪৩২


সংসদে প্রধানমন্ত্রী

একাত্তরে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি


প্রকাশিত:
২৬ জানুয়ারী ২০২৩ ০৪:৩৬

আপডেট:
১১ মে ২০২৫ ০২:২২

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘঠিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের উত্থাপিত প্রস্তাব প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র-বিষয়ক কমিটিতে রয়েছে। প্রস্তাবটি যাতে বিবেচিত হয় সে জন্য বাংলাদেশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তরে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ’র লিখিত প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় অধ্যায়। মূলত পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে সুপরিকল্পিতভাবে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক এ বঞ্চনার বিরুদ্ধে ১৯৪৮ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু সোচ্চার ছিলেন। ভাষা আন্দোলনসহ বাঙালির সব অধিকার আদায়ে তার ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। বঞ্চনায় পিষ্ট এ দেশের আপামর জনসাধারণ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ও ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণায় অনুপ্রাণিত হয়। তারা দেশ মাতৃকার স্বাধীনতার জন্য জীবন বাজি রেখে যার যা আছে তা নিয়েই সর্বাত্মক যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী এ যুদ্ধে ৩০ লক্ষাধিক মানুষের আত্মত্যাগ ও লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। যুদ্ধের সময় মুক্তিকামী সাধারণ মানুষের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের নৃশংসতা বিশ্বের অন্য যে কোনো যুদ্ধে সংঘঠিত নৃশংসতাকে ছাড়িয়ে গেছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নাৎসি নৃশংসতাসহ ইতিহাসের সব কালো অধ্যায়কে হার মানিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে এতো বেশি সংখ্যক মানুষকে হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণের চিত্র ইতিহাসে আর একটিও পাওয়া যাবে না। এই ইতিহাসকে স্মরণ রেখে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে সংঘঠিত গণহত্যার বিরুদ্ধে আমরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি।

তিনি বলেন, আমরা সরকার গঠনের পর থেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘঠিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে কূটনৈতিক পর্যায়ে নানান পদক্ষেপ চালিয়েছি। এরই ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশে চালানো হত্যাযজ্ঞকে পণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য গত বছরের ১৪ অক্টোবর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) একটি প্রস্তাব আনা হয়েছে। প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছেন ওহিও অঙ্গরাজ্যের কংগ্রেসম্যান স্টিভ চ্যাট এবং ক্যালিফোর্নিয়ার কংগ্রেসম্যান রো খান্না। পরে কো-স্পন্সর হিসেবে যোগ দিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যাটি পোর্টার এবং নিউজার্সির ট ম্যালিনোস্কি।

কংগ্রেসম্যানদের উত্থাপিত প্রস্তাবটি বিবেচনার জন্য প্রতিনিধি পরিষদ পররাষ্ট্র -বিষয়ক কমিটির কাছে পাঠিয়েছে। প্রস্তাবটি যাতে বিবেচিত হয় সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ঐকান্তিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন আইন প্রণেতাদের উত্থাপিত এই প্রস্তাবটি বর্তমান সরকারের কূটনৈতিক সফলতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ প্রস্তাবের মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশ রাষ্ট্রকেই নয়, বরং স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অগণিত মানুষের আত্মত্যাগ বিশেষত মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের ও বীরাঙ্গনা মা-বোনদের সম্মানিত করা হয়েছে, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top