সোমবার, ২৯শে ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ই পৌষ ১৪৩২


হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের গুঞ্জন অস্বীকার করলো পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ


প্রকাশিত:
২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:২৫

আপডেট:
২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৯:১৬

ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহিদ শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে, তা নাকচ করে দিয়েছে রাজ্য পুলিশ। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ওই গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।

এর আগে, বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে অনেকে পোস্ট করেন। তবে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) এক্সে দেওয়া পোস্টে হাদির ঘাতকদের গ্রেপ্তারের তথ্য অস্বীকার করেছে।

বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা পোস্টে বলেন, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার সহযোগী আলমগীর শেখকে সহায়তার অভিযোগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) ২৮ ডিসেম্বর ৫ বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।

এক্সে দেওয়া পোস্টে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ বলেছে, ‌‘‘আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু পোস্ট লক্ষ্য করেছি যেখানে দাবি করা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এসটিএফ (স্পেশাল টাস্ক ফোর্স) সাম্প্রতিক একটি ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রতিবেশী দেশের কয়েকজন নাগরিককে আটক করেছে।’’

পোস্টে বলা হয়েছে, ‘‘এই খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনদয়া করে গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন।’’

এর আগে, রোববার শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই সন্দেহভাজন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়ে প্রবেশ করেছে বলে বাংলাদেশ পুলিশ এক সংবাদ সম্মেলনে যে দাবি করে, তা নাকচ করে দেয় মেঘালয় পুলিশভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফমেঘালয় পুলিশবিএসএফের জ্যেষ্ঠ দুই কর্মকর্তা বাংলাদেশ পুলিশের দাবিকে বিভ্রান্তিকর বলে দাবি করেন

দেশটির সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ও আলমগীর শেখ ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালিয়ে বর্তমানে মেঘালয়ে অবস্থান করছেন বলে বাংলাদেশ পুলিশ যে দাবি করেছে; মেঘালয় পুলিশের সদর দপ্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা মহানগর পুলিশের কর্মকর্তাদের ওই দাবিকে ‘অসত্য’ এবং ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে অভিহিত করেছে মেঘালয় পুলিশ। রাজ্য পুলিশের জ্যেষ্ঠ ওই পুলিশ কর্মকর্তা টেলিফোনে হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, ‌‌বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে মেঘালয় পুলিশের আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিক কোনও যোগাযোগ হয়নি। দুই অভিযুক্তের কাউকে গারো পাহাড় এলাকায় শনাক্ত কিংবা গ্রেপ্তার করা হয়নি।

একই দিন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ঘটনার দিনই হাদিকে গুলি করা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ ওরফে রাহুল ও মোটরসাইকেল চালক আলমগীর শেখকে শনাক্ত করা হয়তাৎক্ষণিক তাদের গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক টিম কাজ করছে

তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই ফয়সাল ও আলমগীর ঢাকা থেকে সিএনজি করে আমিনবাজারে যায়। পরবর্তীতে সেখান থেকে মানিকগঞ্জের কালামপুর যায়। সেখান থেকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রাইভেটকারে করে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে পৌঁছে। আসামিদের চিহ্নিত করার আগেই তারা সীমান্ত অতিক্রম করতে সক্ষম হয়।

হালুয়াঘাটের আগে মুন ফিলিং স্টেশনে ফিলিপ এবং সঞ্জয় নামে দুই ব্যক্তি তাদের গ্রহণ করার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। ফিলিপ তাদের সীমান্ত পার করার পর ভারতের মেঘালয় রাজ্যে পুত্তির নামে এক ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করে। পুত্তি ট্যাক্সি ড্রাইভার সামীর কাছে তাদের হস্তান্তর করে। সামী মেঘালয় রাজ্যের তুরা নামক জায়গায় তাদের পৌঁছে দেয়।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের এই দাবি সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে মেঘালয় পুলিশ। রাজ্য পুলিশের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, সীমান্ত পারাপার কিংবা পুর্তি ও সামীর ভূমিকার বিষয়ে কোনও গোয়েন্দা তথ্য, মাঠপর্যায়ের যাচাইবাছাই কিংবা কার্যকর প্রমাণ নেই।

মেঘালয়ের ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘‘রাজ্যের কোথাও পুর্তি কিংবা সামীকে শনাক্ত, খুঁজে বের করা কিংবা গ্রেপ্তার করা হয়নি। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনও ধরনের যাচাই বা সমন্বয় ছাড়াই এই আখ্যান তৈরি করা হয়েছে বলে মনে হয়।’’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top