৫২ বছর আগের স্মৃতি ফেরালেন সাবালেঙ্কা-কিরিওস
প্রকাশিত:
২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:৫৬
আপডেট:
২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৯:৫০
৫২ বছর আগের এক ঐতিহাসিক লড়াইয়ের স্মৃতি আবারও ফিরল টেনিস কোর্টে। তবে এবারের গল্পটা একটু ভিন্ন। নারী টেনিসের নাম্বার ওয়ান তারকার বিপক্ষে দেখা গেল গড়পড়তা এক টেনিস খেলোয়াড়কে। দুবাইয়ের আলো ঝলমলে মঞ্চে ‘ব্যাটল অব দ্য সেক্সেস’ এ মুখোমুখি হন আরিনা সাবালেঙ্কা ও নিক কিরিওস। ম্যাচের উত্তেজনা ছিল আকাশছোঁয়া। কিন্তু সবার মনে প্রশ্ন একটাই, এটা কি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি নাকি শুধু প্রদর্শনীর নাটক?
রবিবার ব্যাটল অব সেক্সেসের ম্যাচে মুখোমুখি হন সাবালেঙ্কা ও কিরিওস। প্রত্যাশিতভাবেই অস্ট্রেলিয়ান তারকার বিপক্ষে হার মানেন সাবালেঙ্কা। কিরিওস ম্যাচটি জিতে নেন ৬-৩ ও ৬-৩ ব্যবধানে।
ব্যাটল অব দ্য সেক্সেস কী:
আপাতদৃষ্টিতে ব্যাটল অব দ্য সেক্সেস মানে লিঙ্গের যুদ্ধ। তবে টেনিসে এটাকে একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়। নারী-পুরুষের সমতা অর্জনের লক্ষ্যে একজন নারী ও একজন পুরুষের মধ্যে প্রদর্শনী ম্যাচের আয়োজন। আবার অনেক ক্ষেত্রে দুজন পুরুষ ও দুজন নারীর মধ্যেও এই ম্যাচ আয়োজন করা হতে পারে।
নারী-পুরুষ মধ্যকার প্রথম ম্যাচ কবে:
বর্তমান সময়ে টেনিসে লিঙ্গ সমতা থাকলেও অতীতে এটি ছিল অনেকটা সোনার হরিণের মতোই। সেসময় কোর্টে সমতা চাইতে গেলে পোহাতে হতো অনেক কাঠখড়। তবে সব ছাপিয়ে ১৮৮৮ সালে প্রথমবার অনুষ্ঠিত হয় পুরুষ-নারী মধ্যকার একটি প্রদর্শনী টেনিস ম্যাচ।
এই ম্যাচে অংশ নেন সেসময়ের উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন আর্নেস্ট রেনশো ও নারীদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন লোটি ডড। সবাইকে অবাক করে প্রথম সেটে ৬-২ সেট পয়েন্টে জিতে যান লোটি ডড। অবশ্য পরের দুই সেট জিতে জয় নিশ্চিত করেন রেনশো।
সবচেয়ে আলোচিত ব্যাটল অব সেক্সেস ম্যাচ:
সালটা ১৯৭৩। সেবার বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েই ব্যাটল অব সেক্সেসে মুখোমুখি হন নারী টেনিসের অন্যতম সেরা তারকা বিলি জিন কিং ও পুরুষদের শীর্ষ বাছাই ববি রিগস।
আলোচিত এই ম্যাচে ববি রিগসকে হারিয়ে দেন বিলি জিন। অবশ্য রিগসের এই হারটা অনেকটা প্রত্যাশিতই ছিল। কেনন ওই বছর বিলি জিনের বয়স কেবল ২৯। অন্যদিকে অনেক আগেই অবসরে চলে যান রিগস। তার বয়স ছিল ৫৫। তারুণ্যের কাছে হার মেনে নেন রিগস। ম্যাচটি শেষ হয়েছিল ৬-৪, ৬-৩ ও ৬-৩ সেট পয়েন্টে।
কী পেল সাবালেঙ্কা-কিরিওস ম্যাচ:
আপাতদৃষ্টিতে সাবালেঙ্কা-কিরিওস ম্যাচ থেকে কিছুই পায়নি টেনিসবিশ্ব। তবে সাবালেঙ্কা ও কিরিওসের জন্য এই ম্যাচটি ছিল ভিন্ন ভিন্ন অর্থে গুরুত্বপূর্ণ।
আরিনা সাবালেঙ্কার জন্য এই ম্যাচটি ছিল প্রোফাইল বাড়ানোর সুযোগ। চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতা এই তারকা মনে করেন, এমন একটি ম্যাচ টেনিসে বাড়তি নজর টানে। তবে সমালোচকদের মতে, এতে নারী ও পুরুষ টেনিসের অপ্রয়োজনীয় তুলনা তৈরি হয়।
এদিকে কিরিওসের জন্য এই ম্যাচটি ছিল ভিন্ন অর্থে গুরুত্বপূর্ণ। ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়ার পর এটিপি ট্যুরে প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি এবং নিজেকে আবারও আলোচনায় রাখার সুযোগ পান তিনি। যদিও ম্যাচে তার গতি ছিল তুলনামূলক কম।
এই ম্যাচ নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। অনেকে ১৯৭৩ সালের বিলি জিন কিং ও ববি রিগসের ঐতিহাসিক লড়াইয়ের সঙ্গে তুলনা টানানকে অযৌক্তিক বলে মনে করছেন। সে সময় চিল লিঙ্গসমতার লড়াই। আর এখন টেনিসে তুলনামূলক সমতা বিদ্যমান রয়েছে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: